পুলিশ-RPF টানোপোড়েন, মৃত্যুর ৮ ঘণ্টা পরও দেহ পড়ে রেললাইনে! শোরগোল হাওড়ায়
প্রতিদিন | ২৮ এপ্রিল ২০২৫
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: চলন্ত এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছিলেন যাত্রী। ট্রেনের চাকা মাথার উপর দিয়ে চলে যায়। রাজ্য পুলিশ নাকি রেল পুলিশ, কারা সেই দেহ উদ্ধার করবে? তাই নিয়ে চলতে থাকে টানাপোড়েন। তার জেরে রাত থেকে রেললাইনেই পড়ে থাকল মৃতদেহ। আজ সোমবার সকালে প্রায় আট ঘণ্টা পরে উদ্ধার হল মৃতদেহ। ন্যক্কারজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার দাসনগর থানার বালটিকুড়ি এলাকায়। গোটা ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়া যাচ্ছিল অঙ্গ এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনেই বাড়ি ফিরছিলেন পেশায় রাজমিস্ত্রি পিন্টু কুমার। বন্ধুদের সঙ্গে তিনি জেনারেল কামরার দরজার ধারে বসে ফিরছিলেন। অসতর্ক থাকায় রাত দুটো নাগাদ বালটিকুড়ি হল্ট স্টেশনের কাছে ট্রেন থেকে তিনি পড়ে যান। এমনই দাবি ট্রেনে থাকা অন্যান্যদের। সহযাত্রীরা ও বন্ধুদের চেঁচামেচিতে কিছু দূর গিয়ে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। ট্রেনের গার্ড ও অন্যান্য যাত্রীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন পিন্টু কুমারের মাথার উপর দিয়ে ট্রেন চলে গিয়েছে। এরপর ট্রেনের গার্ড সেই ঘটনার কথা রেলের কর্মীদের জানান। কিছুক্ষণ পরে ট্রেনটি গন্তব্যের দিকে রওনা হয়ে যায়।
এদিকে সেই মৃতদেহ তোলা নিয়েই শুরু হয় টানাপোড়েন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছিল দাসনগর থানার পুলিশ। রেলপুলিশও ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু কারা দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাবে? সেই নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। রেললাইনের উপর দেহ পাওয়া গিয়েছে। তাই রেলপুলিশ দেহ উদ্ধার করবে। এই কথা জানায় দাসনগর থানার পুলিশ। এদিকে রেলপুলিশ জানায়, ওই এলাকা দাসনগর থানার পুলিশের মধ্যে পড়ে। কাজেই মৃতদেহ তাদেরই নিয়ে যাওয়া উচিত। এই টানাপোড়েনে রাতভর ট্রেন লাইনের উপরেই পড়ে থাকে ওই যুবকের মৃতদেহ। এদিকে দেহের উপর দিয়েই একের পর এক ট্রেন চলে যেতে থাকে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। সকাল হয়ে গেলেও দেহ উদ্ধার নিয়ে টানপোড়েন চলতে থাকে বলে অভিযোগ।
ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। শেষপর্যন্ত আজ সোমবার সকালে ওই দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় রেল পুলিশ। টানাপড়েনের জেরে আট ঘণ্টা রেললাইনের উপর দেহ পড়ে থাকল বলে অভিযোগ। কেন এমন আচরণ করল পুলিশ? সেই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এই বিষয়ে দাসনগর থানা ও রেল পুলিশের তরফে কোনও কথা বলা হয়নি।