এই সময়, মালদা: হঠাৎ বাংলাদেশে ৩২টি পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মালদার এক্সপোর্টাররা। একদিকে অশান্ত বাংলাদেশ। তার উপর কাশ্মীরের পাহেলগামে জঙ্গি হামলা। নয়া নিষেধাজ্ঞায় এই দুই ঘটনার কোনও মিল রয়েছে কি না, তা নিয়ে ধন্দে রপ্তানিকারকরা। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী রপ্তানিতে বাধা না এলেও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সিরামিক আইটেম প্লাস্টিক, স্টিল, টাইলস–সহ ৩২টি পণ্য।
বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির তৈরি হওয়ার পর থেকে রপ্তানি বাণিজ্যে অনেকটাই প্রভাব পড়েছে। পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর সীমান্তে রীতিমতো কড়াকড়ি শুরু করেছে বিএসএফ। পহেলগাম কাণ্ডের পর মালদার মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্তে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে রপ্তানিকারকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, যেহেতু বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের সঙ্গে পাকিস্তানের সুসম্পর্ক তৈরি হচ্ছে, তাই বাংলাদেশে পণ্য পাঠাতে কেন্দ্র সরকার কঠিন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই ৩২টি পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা তারই প্রথম ধাপ হিসেবে মনে করছেন রপ্তানিকারকরা।
মালদার মহাদিপুর এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘মালদার ভারত–বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৪৫০ পণ্যবাহি লরি ওপারে যায়। কিন্তু বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর সেই সংখ্যাটা কমে ৩০০ থেকে ৩৫০–এ এসে ঠেকেছে। আর কাশ্মীরের জঙ্গি হামলার পর এখন অনেকেই বাংলাদেশে পণ্য পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ইতিমধ্যে কেন্দ্র সরকার একাধিক পণ্য সামগ্রী রপ্তানি বাতিল করে দিয়েছে। কেন এগুলি বেছে বেছে বন্ধ করা হলো, সে সম্পর্কে অবশ্য পরিষ্কার করে জানা যায়নি। তবে কাশ্মীর ইস্যুতে মালদার ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য ক্ষেত্রে প্রভাব পড়া সম্ভাবনা রয়েছে।’
জানা গিয়েছে, মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, পাথর–সহ একাধিক পণ্য সামগ্রী রপ্তানি হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সিরামিক আইটেম রপ্তানি হতো। বাংলাদেশ অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর থেকে প্রথম পর্যায়ে ২০টি সামগ্রীর রপ্তানি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র এ বার ৩২টি পণ্য সামগ্রী বন্ধ করে দেওয়া হলো। মহদিপুরের এক রপ্তানিকারক উত্তম ঘোষ বলেন, ‘কাশ্মীর ইসুতে বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছি। কারণ, বর্তমানে যে ভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের মাখামাখি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তাতে অনেক লরিচালক বাংলাদেশে পণ্য নিয়ে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না। তবে এখনও পর্যন্ত অতটা প্রভাব পড়েনি। হয়তো আগামীতে এর প্রভাব পড়তে পারে। তাতে সার্বিক ভাবে সরকারি রাজস্বের ক্ষতি হবে।’
মহদিপুর সিএনএফ এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তাপস কুণ্ডু বলেন, ‘হঠাৎ করে এতগুলি সামগ্রী রপ্তানির ক্ষেত্রে কেন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো সেটা বলতে পারব না। আশঙ্কা করছি বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির পর কাশ্মীর ইসুতেও সীমান্তে রপ্তানি বাণিজ্যে প্রভাব পড়তে পারে। সরকারের বিষয়টি দেখা উচিত।’