তিনি বলেন, “মঙ্গলবার মহাযজ্ঞ চলবে। বুধবার জগন্নাথদেবের বিগ্রহ প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া চলবে। ওইদিন দুপুর আড়াইটে-তিনটে নাগাদ দ্বারোদঘাটন। তারপর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।” বলে রাখা ভালো, রবিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে পুরীর নিয়মে দিঘায় জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠার আচার অনুষ্ঠান শুরু হয়। জগন্নাথদেবের মূল মন্দিরের সামনে হোমযজ্ঞ করার জন্য তৈরি অস্থায়ী আটচালা ঘর। সেখানেই দু’বেলা পুজো এবং হোমযজ্ঞ চলছে। পুরীর মন্দির থেকে ৫৭ জন জগন্নাথদেবের সেবক এবং ইসকন থেকে ১৭ জন সাধু এসেছেন। ১০০ কুইন্টাল আম ও বেলকাঠ এবং ২ কুইন্টাল ঘি পোড়ানো হবে মহাযজ্ঞে।
উল্লেখ্য, দিঘার জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple) রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। অন্তত ৮০০ কারিগর দিঘায় আসেন মন্দির নির্মাণের কাজে। তাঁরা সকলেই রাজস্থানের বাসিন্দা। মন্দিরের প্রধান দ্বার দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই প্রথমে পড়বে তিনটি দীপস্তম্ভ। পুরীর মতো দিঘার মূল মন্দিরে প্রবেশের জন্য রয়েছে চারটি দ্বার। একইভাবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের সিংহদ্বার বা মন্দিরের প্রবেশদ্বারের সামনে রয়েছে কালো রঙের অরুণ স্তম্ভ। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রবেশ দ্বারের সামনে কালো পাথরে তৈরি ৩৪ ফুট লম্বা ১৮ মুখী অরুণ স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে। আর এই স্তম্ভের মাথায় রয়েছে অরুণা মূর্তি।
অরুণ স্তম্ভের সামনের সিংহদ্বারে ঢুকলেই পুরীর মতোই সোজাসুজি জগন্নাথের মূর্তি দেখতে পাওয়া যাবে। পূর্ব দিকের মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বার বা সিংহদ্বারের বিপরীতে থাকছে ব্যাঘ্রদ্বার। উত্তরে হস্তিদ্বার আর দক্ষিণে অশ্বদ্বার। দিঘার মন্দিরের প্রথমে রয়েছে ভোগ মণ্ডপ। ভোগ মণ্ডপের চারটি দরজা। তারপরে রয়েছে ১৬টি স্তম্ভের উপরে নাটমন্দির। নাটমন্দিরের পরে চারটি স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে জগমোহন। জগমোহনের পরে গর্ভগৃহ বা মূল মন্দির। সেখানে সিংহাসনে থাকবে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি। ভোগ মণ্ডপ ও নাটমন্দিরের মাঝে রয়েছে গরুড় স্তম্ভ। নাটমন্দিরের দেওয়ালে রয়েছে কালো পাথরে তৈরি ছোট ছোট দশাবতার মূর্তি। মন্দিরের পাথরের দেওয়ালেও রয়েছে অসংখ্য কারুকার্য। জগন্নাথের ভোগ রান্নার জন্য আলাদা ভোগশালা। দিঘার মন্দিরে পাথরের তৈরি জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মূর্তি রয়েছে। পুজো হবে নিমকাঠের তৈরি মূর্তিতে। নিয়ম মেনে ৩০ এপ্রিল হবে বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠা। পুরীর মতো প্রতিদিন মন্দিরের চূড়ায় ধ্বজা পরিবর্তন করা হবে নিয়ম মেনে। আর এই কাজ করবেন পুরীর মন্দির থেকে আসা দক্ষ লোকজন।