• ‘মহাদেবের কাছে ফেরত চেয়েছি, বাবা ফিরবেই’, মায়ের সঙ্গে পাঠানকোট রওনা দিল পূর্ণমের ছেলে আরবও
    এই সময় | ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ‘আমার বাবাকে ছেড়ে দিক। আর কিছু চাই না। বাবাকে খুব ভালোবাসি।’ — আর্তি আরব সাউয়ের। শেষ পাঁচ-ছয় দিন ধরে মনমরা হয়ে পড়ে রয়েছে সে। পড়াশোনা, খেলাধুলা কোনও কিছুতেই মন টিকছে না। স্কুল যাওয়া বন্ধ। মুখে একটাই কথা, ‘বাবাকে পাকিস্তান ছেড়ে দিক।’ সোমবার মায়ের সঙ্গে পাঠানকোটের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে আরব।

    সকালেই জামাকাপড় পরে তৈরি হয়েছিল। বাড়ির অন্য সদস্যরা যখন তৈরি হচ্ছেন, ততক্ষণে বাড়ির সামনেই কিছুক্ষণ সাইকেল চালিয়ে নেয়। বাবাকে আনতে যাচ্ছ? প্রতিবেশীর প্রশ্নে ৮ বছরের আরবের উত্তর (গলার রুদ্রাক্ষের মালা দেখিয়ে), ‘এটা মহাদেবের আশীর্বাদের মালা। আমি মহাদেবের কাছে বাবাকে ফেরত চেয়েছি। বাবা ফিরে আসবেই। আর আমার পছন্দের খেলনা নিয়ে আসবে।’

    গত কয়েকদিন ধরে বাড়ির অবস্থা, মা, ঠাকুমা, দাদুকে দেখে ছোট্ট আরব উপলব্ধি করতে পেরেছে কিছু একটা খারাপ হয়েছে। মাকে জিজ্ঞাসা করেই জানতে পারে, বাবাকে পাকিস্তানে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সেই থেকে আরব নাছোড়বান্দা। বাবাকে ফিরিয়ে আনতেই হবে। গত মঙ্গলবার বাবার সঙ্গে ফোনে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে কথা হয়। ছয় দিন হয়ে গেল বাবার খোঁজ নেই। কুম্ভ মেলার ডিউটি করে শেষবার যখন পূর্ণম সাউ যখন বাড়ি ফিরেছিলেন, তখন ছেলের জন্য পছন্দের খেলনা নিয়ে এসেছিলেন। সারা বছর হয়তো বাবার সঙ্গে সামনাসামনি দেখাও হয় না আরবের। কিন্তু ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে কথা হয়। সেই অভ্যাসে ছেদ পড়েছে।

    সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ পূর্ণমের স্ত্রী রজনী সাউ, ছেলে আরব-সহ তিন আত্মীয় পাঠানকোট যাওয়ার জন্য দমদম এয়ারপোর্ট-এর উদ্দেশে রওনা দেন। যাত্রার আগের মুহূর্তে বাড়ির সদর দরজায় প্রণাম করে রজনী চোখে জল নিয়ে বলেন, ‘ছেলেকে ঠিকভাবে বলতে পারছি না ওর বাবা কোথায়? দেখি পাঠানকোট গিয়ে কী হয়! পাঠানকোটে কোনও উত্তর না পেলে দিল্লি যাব।’

  • Link to this news (এই সময়)