অসুস্থ রামলাল। ডান পায়ে গভীর ক্ষত দেখা দিয়েছে তার। খবর পাওয়ার পরেই উদ্বিগ্ন বন বিভাগের আধিকারিকরা। রামলাল যাতে দ্রুত সুস্থ হতে পারে সেই জন্য তার চিকিৎসা শুরু করতে চলেছে বন দপ্তর।
ঝাড়গ্রাম এলাকায় যে কয়েকটি দাঁতাল হাতি আছে সেগুলির মধ্যে সব থেকে বেশি পরিচিতি রামলালের। কয়েক বছর ধরেই দলছুট রামলাল। ঝাড়গ্রাম, লোধাশুলি, শালবনিতে ঘুরে বেড়ায় সে। ভালোবেসে তার নাম দেওয়া হয়েছে রামলাল। শান্ত স্বভাবের এই হাতি খাবারের প্রতি লোভ সামলাতে পারে না। মাঝেমধ্যেই দেখা যায়, ঝাড়গ্রাম–লোধাশুলির রাস্তায় লরি আটকে খাবারের সন্ধান করছে। কখনও মুদি বা আনাজের দোকানে হানা দেয়। লোধাশুলি ও জিতুশোলে রাইস ও আটা মিলেও মাঝেমধ্যে ঢুকে পড়ে। কখনও গ্রামে ঢুকে বাড়ি থেকে ধানের বস্তা বের করেও সাবাড় করে দেয়। মানুষের তেমন ক্ষতি না করলেও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে সে। তবুও তার প্রতি ভালোবাসা কমেনি মানুষের।
সেই হাতির পায়ে ক্ষত হয়েছে জানার পরে সাধারণ মানুষের মতই উদ্বিগ্ন বনদপ্তরও। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম জানিয়েছেন, সোমবারই জানা গিয়েছেন রামলালের ডান পায়ের উপরে গভীর ক্ষত দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই কথা জানার পরেই আমরা তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। আগামীকাল, মঙ্গলবার থেকেই তার চিকিৎসা শুরু হবে। কলাগাছের ভেতরে ওষুধ ঢুকিয়ে রামলালকে খাওয়ানো হবে । এছাড়াও বেলুনের মধ্যে তরল ওষুধ ঢুকিয়ে রামলালের ক্ষতস্থানে লাগানো হবে। রামলাল যতদিন না পর্যন্ত সুস্থ হচ্ছে তাকে আমাদের নজরদারিতেই রাখা হবে।’
রামলাল এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে লোধাশুলি ও ঝাড়গ্রাম রেঞ্জ এলাকায়। সোমবারই তার চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের এডিএফও ও প্রাণী চিকিৎসককে।
কিন্তু কীভাবে রামলালের শরীরে এই ক্ষত হয়েছে? বনবিভাগ এবং স্থানীয়দের অনুমান, রামলালের শরীরের এই ক্ষতটি হয়েছে ১০-১২ দিন আগে। শালবনি এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘বনদপ্তর মাঝেমধ্যেই হাতি তাড়াচ্ছে। হুলা পার্টি আগুনের ছেঁকায় রামলালের শরীর পুড়ে যেতেও পারে। কোনও গাছের খোঁচা খেয়েও তার এই অবস্থা হতে পারে।’ রামলাদের শরীরের এই ক্ষত কিভাবে হলো তা জানার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন ঝাড়গ্রামের ডিএফও।