• কোনও দেশের পতাকা পোড়ানো উচিত নয়! নাম না করে দিলীপের নিশানায় শুভেন্দু, বললেন, ‘এটা আমি মোটেই পছন্দ করি না’
    আনন্দবাজার | ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • পহেলগাঁও কাণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিধানসভার গেটের বাইরে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পুড়িয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির অন্য বিধায়কেরাও। বিরোধী দলনেতার এমন কাজ সমর্থন করেন না, নাম না করেই বুঝিয়ে দিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বর্ধমানে ‘চায়ে পে চর্চা’য় পাকিস্তানের পতাকা পোড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি কোনও দেশের পতাকা পোড়ানো উচিত নয়।’’ পাশাপাশি, রাজ্যের শাসকদলকেও নিশানা করেন প্রাক্তন সাংসদ।

    সোমবার বিকেলে বর্ধমান শহরের জিটি রোডের লক্ষ্মীপুর মাঠের জোড়া মন্দিরের কাছে একটি ‘চায়ে পে চর্চা’য় যোগ দিয়েছিলেন দিলীপ। সেখানেই তাঁকে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। উঠে আসে পহেলগাঁও প্রসঙ্গও। তখনই দিলীপ বলেন, ‘‘কোনও দেশের পতাকা পোড়ানো উচিত নয়। আমি এটা আমি মোটেই পছন্দ করি না।’’ দিলীপ মনে করেন, যদি কোনও দেশের সরকার অশান্তি করে বা কিছু লোক গন্ডগোল পাকান, তার জন্য কেন্দ্র রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ঠিক সময়ে জবাব দেবেন।’’

    গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিধানসভার বাইরে বিজেপি পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার ঘটনার প্রতিবাদ দেখিয়েছিল। সেই প্রতিবাদ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন শুভেন্দু। সেই কর্মসূচি থেকে বিরোধী দলনেতাকে ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার হুঙ্কার দিতেও শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘’২৬-এর বদলে ২৬০টা মুন্ডু চাই!’’ পাশাপাশি এ-ও বলেন, ‘‘গাজ়ার মতো পাকিস্তানকে ধূলিসাৎ করতে হবে।’’ তার পরই শুভেন্দু-সহ বিজেপি বিধায়কেরা পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পোড়ান। অনেকের মতে, দিলীপ শুভেন্দুর এই কাজ ভাল ভাবে নেননি। উল্লেখ্য, পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। ভারত ওই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকেই দায়ী করছে। যদিও পাকিস্তান স্পষ্ট জানায়, পহেলগাঁও ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। একই সঙ্গে নিরপেক্ষ তদন্তেরও দাবি জানিয়েছে তারা। তবে ভারত ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে।

    শুধু পাকিস্তানের জাতীয় পতাকার প্রসঙ্গ নয়, প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানোর ঘটনারও নিন্দা করেছেন দিলীপ। তাঁর দাবি, রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রী পহেলগাঁও কাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়িয়েছেন। এটাও উচিত নয়।

    গত বছর নভেম্বরে অশান্ত বাংলাদেশে কয়েক জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে ভারতের জাতীয় পতাকা মাড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময় ওই ঘটনার বেশ কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সমাজমাধ্যমে। দাবি করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের পথে মাটিতে ভারতের জাতীয় পতাকা ফেলে মাড়িয়ে গিয়েছিলেন কয়েক জন পড়ুয়া। সেই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছিল। তাতে শামিল হতে দেখা যায় শুভেন্দুকেও। তখন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘‘ভারতের পতাকায় যারা পা দিয়েছে, তাদের শুধু খাবার নয়, সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’’ সেই শুভেন্দুই পাকিস্তানের পতাকা পোড়ালেন কী ভাবে, প্রশ্ন অনেকের মনেই।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)