• জগন্নাথের কৃপায় ফুলেফেঁপে উঠবে দিঘার ব্যবসা, কাটবে করোনাকালের মন্দা, আশাবাদী ব্যবসায়ীরা
    প্রতিদিন | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: করোনা রুখতে লকডাউন। আর সেই লকডাউনে তালা ঝুলেছিল দিঘার সার-সার হোটেলে। লাটে উঠেছিল হোটেল থেকে রাস্তার ধারের দোকানের ব্যবসা। পেটে লাথি পড়েছিল হাজার হাজার ছোট ব্যবসায়ীর। তারপর বছর ঘুরেছে। মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে। বেড়াতেও গিয়েছে, কিন্তু দেড়-দু’বছরে যে আর্থিক ক্ষতিটা হয়েছিল, তা উসুল করতে পারেননি দিঘার ব্যবসায়ীরা। এবার জগন্নাথ দেবের কৃপায় সেই আফশোস মিটবে বলেই আশাবাদী সৈকত নগরীর ব্যবসায়ীরা। মহাপ্রভুর কৃপায় লক্ষ্মীলাভ হবে তাঁদের।

    গত এক দশকে শ্রী ফিরেছে রাজ্যের সৈকত নগরী দিঘার। বাঁধানো হয়েছে সমুদ্রের পার। চওড়া ও পাকা হয়েছে রাস্তা। আলো বসেছে। সবমিলিয়ে নবরূপে সেজে উঠেছে দিঘা। পর্যটকদের নিরাপত্তায় জোর দিয়ে নেওয়াহয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ফলে আট থেকে আশি সকলের পছন্দের ‘উইকেন্ড ডেস্টিনেশন’ হয়ে উঠেছে দিঘা। একদিকে নীল দিগন্তে বিলীন হওয়া জলরাশি অন্যদিকে হরেক ধরনের মাছের স্বাদ। একদিকে ঝাউবনের হাতছানি অন্যদিকে শামুক-ঝিনুকের পাঁচশো থেকে পাঁচ হাজার, পকেটের রেস্তমতো খরচ করলেই মেলে দেদার মজা। এবার সস্তার এই ‘উইকেন্ড গেটওয়ে’-র দিঘার পালকে যুক্ত হয়েছে নতুন পালক। মন্দির পর্যটন।

    ৩০ এপ্রিল দ্বারোদঘাটন হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের। সেই উপলক্ষে এখন থেকে ভিড় জমতে শুরু করেছে সৈকত নগরীতে। ফোনে ফোনে মন্দিরের খোলা-বন্ধের সময়, আরতির সময়সূচি নিয়েও খোঁজ নিচ্ছেন অনেকেই। ফলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের মন্দিরকে কেন্দ্র করে যে দিঘার ব্যবসায়ীদের ক্যাশবাক্স ফুলেফেঁপে উঠবে তা আগাম বলাই যায়। শুধু হোটেল ব্যবসা নয়, লাভের মুখ দেখবে খাবার হোটেল থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। মন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে নতুন নতুন দোকান। দরজা খুলে যাবে বিকল্প আয়ের।

    এ প্রসঙ্গে দিঘার একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেছিল সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন। তাঁদের মধ্যে এক হোটেল ব্যবসায়ী বুদ্ধদেব প্রধানের কথায়, “সামনেই গরমের ছুটি। এই সময় দিঘায় ভিড় জমে। এবার তো মন্দির উদ্বোধন হয়ে যাচ্ছে। তার জন্য ভিড় আরও বাড়বে।” আরেক হোটেলের ম্যানেজার দীপঙ্কর মাঝি বলছেন, এতদিন জগন্নাথ দেবের পুজো করতে মানুষ পুরীতে ছুটত। কিন্তু সকলে তো যেতে পারেন না। তাঁরা নিশ্চয়ই দিঘায় আসবেন। পর্যটক বাড়বে।” আরেক স্থানীয় ব্যবসায়ী আজহারউদ্দিনের কথায়, “লকডাউনের সময় বিপুল ক্ষতি হয়েছে। সেই টাকা এখনও ওঠেনি। তবে মন্দির তৈরির পর পর্যটক বাড়বে। সেই ক্ষতির টাকা উঠে আসবে আশা করি।”

    দিনশেষে সকলেই জগন্নাথদেবের উপর আস্থা রেখে লক্ষ্মীলাভের আশায় বুক বাঁধছেন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)