বাঁশের সেতু ভেঙেছে ৫ বছর আগে, নদীর হাঁটু জল পেরিয়ে শহরে আসছেন বাসিন্দারা
বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, কান্দি: একটা সময় বাঁশের সাঁকোই ছিল ভরসা। তার উপর দিয়ে হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে কানা ময়ূরাক্ষী নদী পেরিয়ে কান্দি শহরে আসতে পারতেন প্রায় ১৫টি গ্রামের বাসিন্দারা। তবে প্রায় পাঁচ বছর আগে বাঁশের সেই সাঁকো ভেঙে পড়ার পর গ্রামবাসীদের দুর্দশার আর অন্ত নেই। এখন হাঁটু জল পেরিয়ে তাঁরা শহরে আসছেন। তাই কান্দি শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া কানা ময়ূরাক্ষীতে ফের একবার সেতুর দাবিতে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা।
কান্দি শহরের পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গিয়েছে ওই নদী। হোমতলার কাছে প্রায় দুই দশক আগে বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগেই তৈরি করেছিলেন বাঁশের সেতু। ওই সেতু বহু বছর ধরে ব্যবহারও করেছেন তাঁরা। কান্দি থানার কল্যাণপুর, মাধুনিয়া, খড়গ্রাম থানার খড়সা ইত্যাদি প্রায় ১৫টি গ্রামের বাসিন্দারা সেতু পেরিয়ে কান্দি শহরে আসতেন খুব সহজে। গ্রামগুলির ছাত্রছাত্রীরাও সেতু পেরিয়ে স্কুলে আসত।
কিন্তু বছর পাঁচেক আগে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতু ভেঙে পড়ে। এরপর আর নতুন করে বাঁশের সেতু তৈরি হয়নি। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হলেও তৈরি হয়নি ফুটব্রিজ। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের এখন ঘুরপথ ব্যবহার করে শহরে আসতে হয়। অনেকে আবার হাঁটু জল পেরিয়েও শহরে আসেন। যেমন সোমবার ওই নদী পেরিয়ে শহরের হোমতলায় পুজো দিতে এসেছিলেন মাধুনিয়ার গৃহবধূ শ্রাবণী ঘোষ। তিনি বলেন, বাঁশের সেতুও আমাদের অনেক উপকারে লাগত। এখন শাড়ি ভিজিয়ে পার হতে হচ্ছে। অপর গৃহবধূ স্বর্ণালী নন্দী জানান, আমাদের গ্রাম থেকে কান্দি শহরে আসার এটাই শর্টকাট রাস্তা। তাতে শাড়ি ভিজলেও ক্ষতি নেই। না হলে অনেকটা রাস্তা ঘুরতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা তপনকুমার দত্ত বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর বহুবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বাসিন্দারা। কিন্তু কোনও কাজ হল না।
স্থানীয় যশোহরি আনুখা ২ পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ফুটব্রিজের জন্য প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। বরাদ্দ পরবর্তীতে জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়াররা এলাকা পরিদর্শন করেন। কিন্তু ওই পরিমাণ টাকায় ব্রিজ হওয়া সম্ভব নয় বলে ফুটব্রিজের কাজ এগয়নি। পঞ্চায়েত প্রধান মধুমিতা পাল বলেন, এলাকার বাসিন্দাদের কাছে এটি সত্যিই গভীর সমস্যা। আমরা চাই ওখানে একটি ফুটব্রিজ হোক। ওখানে দু’দিকে ঢালাই রাস্তাও রয়েছে। ফুটব্রিজের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হবে।