পলি-বালিতে ভরেছে এক নম্বর ইনটেক ওয়েল, সংস্কারে আট কোটির ডিপিআর
বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: পলি ও বালিতে জেরবার তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেল। যার জেরে বিপর্যস্ত শিলিগুড়ি পুরসভার পানীয় জল প্রকল্পের এক নম্বর ইনটেক ওয়েল। সেটি কার্যত অচল। এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী সেচদপ্তর। তারা ক্যানেলের পলি ও বালি তুলতে প্রায় ৮ কোটি টাকার ডিপিআর রাজ্যের কাছে দাখিল করেছে। এদিকে, বর্ষার মরশুমে শিলিগুড়ির জল পানীয় সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে আরও একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে পুরসভা। তারা এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠাচ্ছে।
শিলিগুড়ি শহরের ফুলবাড়ি জল প্রকল্প তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেলের উপর নির্ভরশীল। প্রায় দেড় বছর আগে সিকিমে হ্রদ বিস্ফোরণের জেরে তিস্তা নদী সহ সংশ্লিষ্ট ক্যানেল ভরেছে পলি ও বালিতে। এতে জল প্রকল্পের এক নম্বর ইনটেক ওয়েল কার্যত বিপর্যস্ত। এই ওয়েলের কাছে বালির স্তর জমে আছে। এখন সেখান থেকে জল তুলে ট্রিটমেন্ট প্লান্টে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। সোমবার পুরসভায় একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এমন তথ্য পেশ করেছে সেচদপ্তর এবং জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর।
বৈঠকের পর মেয়র গৌতম দেব বলেন, ওই ইনটেক ওয়েলের কাছে বালি, পলি জমলেও শহরের জল সরবরাহ বন্ধ হয়নি। কারণ দ্বিতীয় ইনটেক ওয়েল কয়েক মাস আগে তৈরি করা হয়েছে। সেটি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। তবে ওই ইনটেক ওয়েল চত্বর সহ ক্যানেল থেকে পলি, বালি সরাতে প্রায় ৮ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করেছে সেচদপ্তর। তারা এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। পাশাপাশি তারা বালি ও পলি সরানোর জন্য বিকল্প পথও খুঁজছে। সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেল সংস্কার করার ওই প্রস্তাব তিস্তা ব্যারেজ থেকে পাঠানো হয়েছে। তবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য পলি ও বালির প্রয়োজন হয়। বিনামূল্যে তাদের সেখান থেকে ওসব তোলার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাগডোগরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জানানো হয়েছিল। তারা অবশ্য তাতে রাজি না হয়ে চেঙ্গা-মাঞ্ঝা নদী থেকে বালি তুলছে। সংশ্লিষ্ট ক্যানেল তিস্তা নদীর সঙ্গে যুক্ত। ওই নদীর উৎপত্তিস্থল সিকিম। ফি-বর্ষায় সিকিম পাহাড় থেকে পলি, বালি, গাছের গুঁড়ি তিস্তার জলের সঙ্গে ক্যানেলে আসে। তাতে ব্যহত হয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা।
মেয়র বলেন, এই সমস্যা মেটানোর জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার প্রস্তাব রাজ্যের কাছে পাঠানো হবে। কমিটিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, সেচ, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের রাখার প্রস্তাব দেওয়া হবে।
এদিনের বৈঠকে মেয়র ছাড়াও সেচ, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য দুলাল দত্ত প্রমুখ ছিলেন।