সংবাদদাতা, পতিরাম: ঘরে একাই ঘুমোচ্ছিল ১২ বছরের এক নাবালিকা। পাশের ঘরে ছিলেন সৎ মা। সেই বাড়ির টিনের কেটে ঢুকে পড়ল দুই দুষ্কৃতী। ঘুমন্ত নাবালিকাকে যৌন হেনস্তা করে পালিয়ে গেল তারা।
তাদের একজন নাবালিকার মুখ চেপে ধরে, আরেকজন হেনস্তা করে বলে অভিযোগ। তাদের হাত ছাড়িয়ে কোনওরকমে নাবালিকা চিত্কার করলে পাশের ঘর থেকে মা ছুটে আসেন। তখন ঘর থেকে পালানোর চেষ্টা করে দুই অভিযুক্ত। একজন পালিয়ে গেলেও অন্যজনকে ধরে ফেলেন মা। তবে তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। মা ও মেয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করলে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। শনিবার রাতে বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকায় এই ঘটনার পর অভিযোগ হতেই রবিবার রাতে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে বালুরঘাট থানার পুলিস। আরেকজন গা ঢাকা দিয়েছে। বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস বলেন, একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরেকজনের খোঁজ চলছে। পুলিস সূত্রে খবর, ওই নাবালিকা আদিবাসী পরিবারের। মায়ের মৃত্যুর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তিনি স্ত্রীর হাতে মেয়ের দায়িত্ব দিয়ে ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়েছেন। সৎ মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন মহিলা। পরিবারটির বাড়ির অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। টিনের ঘর হলেও সেটি সুরক্ষিত নয়। নাবালিকার উপরে প্রতিবেশী দুই যুবক কয়েকদিন ধরে নজর রাখছিল বলে অভিযোগ। টিনের বেড়া কেটে প্রথমে বাড়িতে ঢোকে দুই দুষ্কৃতী। এরপর দরজা ফাঁক করে নাবালিকার ঘরে প্রায় রাত দুটো নাগাদ ঢুকে পড়ে তারা। প্রথমেই নাবালিকার মুখ চেপে ধরে একজন। যৌন হেনস্তার সময় ঘুম ভাঙলেও প্রথমে চিৎকার করতে পারেনি নাবালিকা। কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর ধস্তাধস্তি শুরু হলে কোনওরকমে চিৎকার করে ওই নাবালিকা। পাশের ঘর বেরিয়ে এলে তার মা দেখেন দুই দুষ্কৃতী ঘর থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করে একজনকে ধরে ফেলেন। চিত্কার করে আশেপাশের লোকজনকে ডাকতে শুরু করলে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতী। তবে দু’জনকেই চিনে ফেলেন নাবালিকার মা। প্রতিবেশীরা এসে বাড়ির চারপাশে খোঁজাখুঁজি করলেও দুই অভিযুক্তের হদিশ পাননি। রবিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই নাবালিকার সৎ মা। তদন্তে নেমে পুলিস গ্রামে গিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করে রবিবার।
এবিষয়ে নাবালিকার সৎ মা বলেন, মধ্যরাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আমার মেয়েকে যৌন হেনস্তা করেছে দু’জন। এমনকী ঘটনার কথা কাউকে জানালে তারা মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু আমরা অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিস তদন্ত করে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করুক।