নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: আগাম নোটিস জারি করা হলেও টোটো নিয়ন্ত্রণে রাশ টানতে প্রথমদিনেই কার্যত ব্যর্থ হল সিউড়ি পুরসভা। কিউআর কোড ছাড়া বহু টোটো সোমবারও শহরের বিভিন্ন রাস্তা দাপিয়ে বেড়াল। ঘটনায় চালকদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ পুরসভার চেয়ারম্যান। তিনি এবার সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসার বার্তা দিয়েছেন। সেইসঙ্গে এই কাজে আরও বেশি প্রশাসনিক সহযোগিতার দাবিও তিনি জানিয়েছেন। যদিও পুলিস-প্রশাসন পুরসভার পাশে থাকার কথা শুরু থেকেই বলে আসছে। বেপরোয়া টোটোর বিরুদ্ধে এদিনও পুরসভার পাশে দাঁড়িয়েছিল মহকুমা প্রশাসন। তবে, প্রথমদিন বেপরোয়া টোটোর গতিতে রাশ টানা সম্ভব না হওয়ায় আগামীতে মহকুমা প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আজ, মঙ্গলবার থেকে পুলিসের উপস্থিতিতে শহরজুড়ে সারপ্রাইজ ভিজিট শুরু হবে। সেইসঙ্গে চলবে ধরপাকড়ও। মহকুমা শাসক সুপ্রতীক সিনহা বলেন, নিয়ম ভেঙে টোটো চলাচল নজরে এলেই তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। সেইসঙ্গে প্রয়োজন অনুসারে চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হবে।
শহর সিউড়ির প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলগলিতে কয়েক হাজার টোটো দিনভর চলে। নিয়ম না মেনে টোটো চলাচলের জেরে হামেশাই শহরের নানা প্রান্তে যানজট সৃষ্টি হয়। সমস্যা সমাধানে মহকুমা প্রশাসনের সহযোগিতায় সিউড়ি পুরসভা রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত টোটোগুলিতে কিউআর কোড বসানোর কাজ শেষ করে। গোলাপি ও নীল রঙের ভিন্ন কিউআর কোড রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত টোটোতে লাগানো হয়েছে। এরপরই পুরসভার তরফে জোড় বিজোড় পদ্ধতিতে টোটো চলাচলের বিষয়ে নোটিস জারি করা হয়। ঘটনায় টোটো চালকদের একাংশ পুরসভার ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে। টোটো ইউনিয়নের সদস্যরা পুরসভার সিদ্ধান্তে সহমত পোষণ করলেও চালকরা তা মানতে নারাজ। ফলে এদিনও শহরের নানা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় কিউআর কোডবিহীন টোটো চলতে দেখা গিয়েছে। এদিন জোড় নম্বরের টোটোদের রাস্তায় নামার কথা ছিল।
টোটো চালক শেখ আজাহারউদ্দিন বলেন, এই পেশায় দীর্ঘ সাত বছর ধরে রয়েছি। টোটো চালিয়ে সংসার চলে। পুরসভার নিয়ম মানতে হলে না খেয়ে থাকতে হবে। প্রয়োজনে আমরা চালকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে শামিল হব।
পুরসভার নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একাংশ কিউআর কোড বিহীন টোটোর চালক রাস্তায় নামায় ক্ষুব্ধ পুরসভার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, একাধিক সময় চালকদের সতর্ক করা হয়েছে। মাঝে ধরপাকড়ও করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে পুলিস ও প্রশাসনের তরফে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরাও চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করছি পুলিস ও প্রশাসনের যৌথ প্রয়াসে টোটোর গতিতে রাশ টানা সম্ভব হবে। সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে।
সিউড়ি শহর টোটো ইউনিয়নের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বলেন, একটু সময় হয়তো লাগবে। তবে পুরসভার তরফে জারি করা নিয়ম অবশ্যই কার্যকর হবে। আমরা চালকদের সচেতন ও সতর্ক করার কাজ করছি। সিউড়ি শহরজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কিউ আর কোড বিহীন টোটো। -নিজস্ব চিত্র