• জঙ্গিপুর: বেওয়ারিশ লাশ জমে মহকুমা হাসপাতালে, দুর্গন্ধে টেকা দায়
    বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল মর্গে বেড়েই চলেছে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা। গত কয়েক বছর ধরে মর্গের কুলিং সিস্টেম বিকল অবস্থায় রয়েছে। মর্গ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। জমে থাকা লাশে পচন ধরেছে। দেহের দাবিদার না মেলায় বিপাকে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। মর্গের পাশেই জমছে আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধে নাজেহাল হতে হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসক, রোগী থেকে শুরু করে তাঁদের পরিজন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের। এছাড়া মর্গের আশপাশের দোকানের মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। জঙ্গিপুর পুরসভা এবিষয়ে নির্বিকার বলে অভিযোগ। যদিও মর্গ দেখভালের দায়িত্ব তাদের নয় বলে সাফ জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কাশীনাথ পাঁজা বলেন, মর্গ দেখভালের দায়িত্ব আমাদের নয়। বিষয়টি পুলিসের দেখার কথা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি। জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসক একাম জে সিং বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মর্গ সংস্কার করা হবে, ওয়ার্ক অর্ডারও দেওয়া হয়েছে। 

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের আউটডোর সংলগ্ন মর্গে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা বাড়ছে। মাসের পর মাস লাশগুলির কোনও দাবিদার মেলেনি। অধিকাংশই পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এছাড়াও রয়েছে নদীতে ভেসে আসা বা পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহ। ভবঘুরে থেকে যুবক ও যুবতীরও দেহ রয়েছে। কিন্তু লাশের দাবিদার না মেলায় ঠাঁই হয়েছে মর্গে। যদিও বেওয়ারিশ লাশ নির্দিষ্ট সময়ের পর প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সৎকারের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু তারও অনুমতি মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। এদিকে বছরের পর থেকে মর্গের কুলিং সিস্টেম অকেজো থাকায় দেহগুলিতে পচন ধরেছে। তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ।

    বর্তমানে ছ’টি দেহ জমে রয়েছে। কয়েকটি দেহ বছরখানেক ধরে রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর আত্মীয় সরিফ শেখ বলেন, মৃতদেহগুলি থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় মর্গের পাশ দিয়ে হাঁটা দায় হয়ে যাচ্ছে। অথচ হাসপাতালে আমাদের রোগী ভর্তি থাকায় এখানে আসতে হচ্ছে। প্রশাসন অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করুক। দুর্গন্ধে ক্ষুব্ধ চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরাও। মর্গের পাশেই পুরনো আউটডোর ভবনে প্রবেশের মুখেই আবর্জনা জমে রয়েছে। আবর্জনায় অবাধে গবাদি পশু ঘুরে বেড়াচ্ছে। খাবারের খোঁজে তারা আবর্জনা ছড়াচ্ছে। এক নার্স বলেন, মর্গের পাশ দিয়েই আমাদের চলাচল করতে হয়। দিনদিন পরিস্থিতি সাংঘাতিক ও অসহনীয় হয়ে উঠছে।

    পুরসভা চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি হাসপাতালের সুপার মারফত জেনেছি। মর্গের আবর্জনা যাতে নিয়মিত সাফাই হয় সেবিষয়ে কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)