নিজস্ব প্রতিনিধি, চন্দ্রকোণা রোড: প্রায় ২৬৪কোটি টাকা ব্যয়ে চন্দ্রকোণা রোড সংলগ্ন কুবাই নদীর উপর তৈরি হয়েছে সেতু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই সেই সেতুর উদ্বোধন করেছেন। বহু অপেক্ষার পর সেতু তৈরি হওয়ায় খুশি চন্দ্রকোণা রোডের ব্যবসায়ীরা। কারণ এই সেতু তৈরি হওয়ায় ব্যবসায় শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। সেতু তৈরির ফলে খুবই উপকার হয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারাও।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর চন্দ্রকোণা রোড এলাকায় কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হয়। এতদিন কুবাই নদীর উপর ভগ্নপ্রায় সেতুর উপর দিয়েই যাতায়াত করতে হতো। স্কুল-কলেজপড়ুয়া থেকে ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী মানুষজন ঝুঁকি নিয়েই সেতু পারাপার করতেন। পাশাপাশি ওই এলাকার লেভেল ক্রসিংয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হতো নিত্যযাত্রীদের। দীর্ঘক্ষণ গেট বন্ধ থাকায় রোগী ও পরিজনদের নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হতো। সেতু তৈরি হওয়ায় সেইসব সমস্যার সমাধান হয়েছে।
চন্দ্রকোণা রোড ডাবচা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সন্দীপ চৌধুরী বলেন, এই সেতু তৈরির ফলে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক সুবিধা হচ্ছে। সাধারণ মানুষও ভীষণ উপকৃত হচ্ছেন। ব্যবসার গতিও বাড়ছে। এই সেতু কবে চালু হবে তারই অপেক্ষায় ছিলেন সাধারণ মানুষ। এখন আর লেভেল ক্রসিংয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, কুবাই নদীর উপর সেতুটির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাইছিল সাধারণ মানুষও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সেতুটির উদ্বোধন করার পরই যাতায়াত শুরু হয়েছে। খুব কম সময়ে চন্দ্রকোণা রোডে পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে। প্রশাসনের ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রিটিশ আমলে কুবাই নদীর উপর একটি সেতু তৈরি করা হয়। সেতুটি খুবই সংকীর্ণ ছিল। এছাড়া সেতুর উপরের রাস্তার হালও ছিল বেহাল। বাম আমলে সেতু তৈরির জন্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২০১৭সাল থেকে মেদিনীপুর-চন্দ্রকোণা রোড ৬০নম্বর জাতীয় সড়কে কুবাই নদীর উপর সেতু তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৯সাল সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। সেতুটি প্রায় ২.৮কিলোমিটার লম্বা। কাজটি করেছে পিডব্লুডির ন্যাশনাল হাইওয়ে উইংস। গত ২২ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি এই সেতুর উদ্বোধন করেন। জানা গিয়েছে, চন্দ্রকোণা রোড এলাকায় প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার আলুর বীজের ব্যবসা হয়। এছাড়া দুর্গাপুর, আসানসোল, মুর্শিদাবাদ সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যেতে এই সেতুই একমাত্র ভরসা। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক ও গড়বেতা-৩ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রাজীব ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কথা দিলে কথা রাখতে জানেন। এই সেতু তৈজর হওয়ায় ভিনজেলার মানুষও উপকৃত হবেন। তবে সেতু তৈরির ফলে বেশকিছু গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুল পড়ুয়াদের সমস্যা হচ্ছে। সেই সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে। চন্দ্রকোণা রোড এলাকার বাসিন্দা বিনয় মণ্ডল বলেন, খুবই পোক্ত সেতু তৈরি হয়েছে। এখন খুব তাড়াতাড়ি চন্দ্রকোণা রোডে পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে। এই সেতু এলাকার অর্থনীতি বদলে দেবে বলে মনে করি।
এই সেতু তৈরি হওয়ায় খুশি স্থানীয় বিজেপি নেতারাও। ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলা বিজেপির প্রাক্তন সম্পাদক গৌতম কৌড়ি বলেন, সেতু তৈরি হওয়ায় সাধারণ মানুষের খুবই উপকার হচ্ছে। আগে খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হতো।