• আউশগ্রামের কাজু পাড়ি দিচ্ছে দীঘায়, লক্ষ্মীলাভ স্থানীয়দের
    বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: জঙ্গলের গাছ থেকে পেড়ে নেওয়া হয় কাজুবাদাম। তারপর বনদপ্তরের নজরের আড়ালেই চলে কাঁচা কাজু কেনাবেচা। আর পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের কাজুবাদাম বিক্রি করেই স্থানীয় বাসিন্দাদের লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে। এখানকার জঙ্গলের কাজুবাদাম পাড়ি দিচ্ছে দীঘায়। আউশগ্রামের জঙ্গল থেকে কয়েক কুইন্টাল কাজু উৎপাদন হয়। অথচ, পূর্ব মেদিনীপুরের মতো কাজুবাদাম প্রসেসিং ইউনিট কোথাও নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আউশগ্রামে কাজুবাদাম উৎপাদন ঘিরে হাব তৈরি করা হোক। তাতে গ্রামীণ অর্থনীতি বদলে যেতে পারে। বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে।

    আউশগ্রামের জঙ্গলেই রয়েছে বড় কাজুবাগান। মরশুমে বনদপ্তরের অধীনে থাকা গাছগুলি থেকে প্রতিদিন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ কাঁচা কাজু সংগ্রহ করেন। সেগুলি তাঁরা দীঘা থেকে আসা ব্যবসায়ীদের বিক্রি করেন। বছরের পর বছর ধরে দীঘায় নিয়ে যাওয়া হয় আউশগ্রামের কাজু। সেখানেই প্রসেসিং হয়ে বিক্রি করা হয়। গ্রামবাসীদের দাবি, রাজ্য সরকার এই এলাকায় অন্তত ছোট একটি কাজুবাদাম প্রসেসিং ইউনিট গড়ুক। তাহলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বিকল্প আয়ও বাড়বে।

    আউশগ্রাম বনদপ্তরের বিট অফিসার তাপস মাহাত বলেন, আমাদের এখানে এক একর জায়গায় প্রায় ১০০টির কাছাকাছি কাজুবাদামের গাছ রয়েছে। আগে টেন্ডার হতো। এখন আর সেসব হয় না। স্থানীয় বাসিন্দারা জঙ্গল থেকে কাজু কুড়িয়ে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন। প্রসেসিং ইউনিটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

    জানা গিয়েছে, ২০২১-’২২ সালে ভারতে ৭৭৯ হাজার টন কাজু উৎপন্ন হয়। ২০২২-’২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮১০ হাজার টন। ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কাজু রপ্তানিকারক ও আমদানিকারক দেশ হিসাবে পরিচিত। রাজ্যের  পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি হল কাজুবাদাম শিল্পের মূল ঘাঁটি। একদা উপকূলবর্তী এই অঞ্চলে ভূমিক্ষয় রোধ করতে কাজুবাদামের চাষ শুরু হয়। আর এখন সেই কাজুবাদাম গাছই কাঁথির মানুষদের আশার আলো দেখাচ্ছে। বিকল্প অর্থনীতির পথ দেখাচ্ছে এই কাজুবাদাম শিল্প। কাজুবাদাম চাষ ও তার প্রক্রিয়াকরণের কাজের সঙ্গে এই অঞ্চলের প্রচুর মানুষ যুক্ত রয়েছেন। কাঁথি মহকুমায় অন্তত ৭০০টি কাজু কারখানা রয়েছে।

    আউশগ্রামের বাসিন্দা সঙ্গীতা কর্মকার, অর্চনা কর্মকার বলেন, আমরা সারাদিন জঙ্গলে ঘুরে কাঁচা কাজু সংগ্রহ করি। তারপর সেগুলি দীঘা থেকে আসা মহাজনদের প্রতি কেজি ১৫টাকা দরে বিক্রি করি। সারাদিনে আমাদের ১০০টাকা লাভ হয়। প্রশাসন আউশগ্রামেই কাজু প্রসেসিং ইউনিট তৈরি করে দিলে আমাদের বাড়তি আয় হতো। দীঘা থেকে আসা ব্যবসায়ী শেখ আব্দুল সাত্তার, খুকুমনি বিবি বলেন, আমরা বহু বছর ধরে কাজু বাদাম সংগ্রহ করতে আউশগ্রামে আসি। এখানকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে কাজু কিনে লরি ভর্তি করে দীঘায় নিয়ে যাই। সেখানেই আমাদের মেশিন আছে। আউশগ্রাম থেকে মরশুমে ৮-১০কুইন্টাল কাজু সংগ্রহ করি। 
  • Link to this news (বর্তমান)