• ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দিয়ে চাকরি, ১৬ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর
    বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র (তফসিলি জাতি, জনজাতি ও ওবিসি সার্টিফিকেট) জমা দিয়ে চাকরি বাগানোর অভিযোগে ১৬ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করল লালবাজার। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তাঁদের বিরুদ্ধে জমা পড়া অভিযোগের সারবত্তা মেলায় এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে। এক্ষেত্রে মোটা টাকার লেনদেন হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এই ভুয়ো শংসাপত্রগুলি কারা সরবরাহ করেছিল এবং এর মাধ্যমে কতজন চাকরি পেয়েছেন, জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।

    সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির তরফে লালবাজারে অভিযোগ করে বলা হয়, ২০১২ সালে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন শতাধিক কনস্টেবল। সেই সঙ্গে কয়েকটি জেলায় শিক্ষকতার চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রেও নকল এসসি ও এসটি সার্টিফিকেট জমা পড়েছে বলে খবর আসে। আরও কিছু সরকারি দপ্তর থেকেও একই অভিযোগ আসতে থাকে। ইতিমধ্যে হাইকোর্ট ওবিসি সংক্রান্ত একটি মামলায় জানিয়ে দেয়, ২০১০ সাল থেকে ইস্যু হওয়া ওবিসি সার্টিফিকেটের কোনও বৈধতা নেই। সেই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও স্থগিতাদেশ আসেনি। এদিকে, ভুয়ো শংসাপত্র নিয়ে ভূরি ভূরি অভিযোগ আসতে থাকায় নড়েচড়ে বসে দপ্তর। ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস ওয়েফেয়ারের কলকাতার জয়েন্ট ডিরেক্টরের তরফেও অভিযোগ করা হয় লালবাজারে। অনুসন্ধান শুরু করে পুলিস। বিভিন্ন দপ্তরে জমা পড়া এসসি, এসটি ও ওবিসি সার্টিফিকেটের কপি সংগ্রহ করা হয়। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে যে ‘কপি’ জমা পড়েছিল, সেগুলি চেয়ে পাঠানো হয়। সার্টিফিকেটের ফর্ম্যাট  দেখেই সন্দেহ বাড়ে তদন্তকারীদের। সেগুলি যাচাইয়ের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় নির্দিষ্ট দপ্তরে। সেখান থেকে ১৬টি সার্টিফিকেট চিহ্নিত করে বলা হয়, এগুলি নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইস্যু করেনি। এই রিপোর্ট আসার পরই, ২৬ এপ্রিল ১৬ জনের  বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় এফআইআর করে তার তদন্তভার নেয় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। টাকার বিনিময়ে এই সার্টিফিকেটগুলি তৈরি করানো হয়েছিল বলে সেখানে উল্লেখও করা হয়। সূত্রের খবর, আরও অনেক সার্টিফিকেট যাচাইয়ের কাজ চলছে। 

    গোয়েন্দারা জেনেছেন, এই ১৬ জনের মধ্যে বেশিরভাগই কলকাতার বাসিন্দা। কয়েকজন দুই ২৪ পরগনারও আছেন। এই জল সার্টিফিকেট পাইয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যজুড়েই একটি চক্র সক্রিয়। লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে এক-একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের ফোন ঘেঁটে চক্রের পান্ডাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এই ১৬ জন কীভাবে ভুয়ো শংসাপত্রের টাকা মিটিয়েছিলেন, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।   
  • Link to this news (বর্তমান)