• বন্দেমাতরম ভবন সংস্কার করতে চায় চুঁচুড়া পুরসভা, প্রস্তাব রাজ্যের কাছে
    বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিবিজড়িত ‘বন্দেমাতরম ভবন’ সংস্কার করতে চায় চুঁচুড়া পুরসভা। পাশাপাশি, একটি মিউজিয়ামও তারা গড়তে চায়। ওই পরিকল্পনার বিশদ প্রস্তাব রাজ্য হেরিটেজ কমিশন ও পুরদপ্তরের কাছে পাঠালেন পুরকর্তারা। বাংলার সাহিত্যসম্রাটের স্মৃতিবিজড়িত বন্দেমাতরম ভবনের বেহাল দশা নিয়ে নানা সময়েই প্রশ্ন উঠেছে। ইতিউতি বিচ্ছিন্ন কাজ হলেও সার্বিকভাবে ঐতিহ্যবাহী ওই ভবনটির রক্ষণাবেক্ষণ কখনও হয়নি। এবার সেই কাজটিই করতে চাইছে চুঁচুড়া পুরসভা। সেইসঙ্গে ওই ভবনের আকর্ষণ বৃদ্ধি করতে বঙ্কিমচন্দ্রের চুঁচুড়াবাসের সময়কে ধরে একটি সংগ্রহশালাও তৈরি করা হবে। পুরকর্তাদের দাবি, ওই বিষয়ে সাহিত্য গবেষক থেকে বিশিষ্ট মানুষদের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হবে।

    চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় বলেন, ওই ভবনটি হেরিটেজ হিসেবে চিহ্নিত। তাই চাইলেই কিছু করা যায় না। আমরা একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেছি। সেটিই হেরিটেজ কমিশন ও রাজ্য পুরদপ্তরের কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। মূলত, আমরা ভবনটি সংস্কার করতে চাই। অবশ্যই তার গঠনরীতিকে বজায় রেখেই কাজ হবে। পাশাপাশি একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হবে। তাঁর অভিযোগ, বন্দেমাতরম ভবন নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ কেউ ছাড়েননি। প্রধানমন্ত্রী থেকে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব, ভবন নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু তার সংস্কারের পরিকল্পনা কেউ করেননি।

    স্থানীয় বাসিন্দা তথা চুঁচুড়ার আঞ্চলিক ইতিহাসের চর্চাকার সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চুঁচুড়া তথা হুগলির একটি ঐতিহ্য পায়রার বাসাতে পরিণত হয়েছে। আমার মনে হয়, শহরের নাগরিকরা, সাহিত্যপ্রেমী মানুষ সকলেই চান যে, বন্দেমাতরম ভবনের ঐতিহ্য রক্ষা পাক। প্রকল্প, প্রস্তাবের  থেকে এবার বেশি জরুরি কাজটা হওয়া। হুগলির সমাজকর্মী গৌতম সরকার বলেন, বহু বছর ধরে বন্দেমাতরম ভবন নিয়ে নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এবার কাজ করা হোক। আমরা ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাই। সেই দায়িত্ব যিনিই নেবেন, নাগরিক সমাজ তাঁকেই কৃতজ্ঞতা জানাবে।

    ১৮৭৭ সালের শেষ পর্ব থেকে ১৮৮১ সাল পর্যন্ত চুঁচুড়ায় ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ওই সময়েই আ‌জ঩কের বন্দেমাতরম ভবনে লেখা হয়েছিল ‘আনন্দমঠ’ এর মতো কালজয়ী উপন্যাস। কৃষ্ণকান্তের উইলও লেখা হয়েছিল। সেই স্মৃতিতেই গঙ্গাপাড়ের ওই বাসগৃহকে পরবর্তী সময়ে বন্দেমাতরম ভবন বলে নামকরণ করা হয়। কিন্তু ওইটুকুই। প্রাচীন ওই ভবনের সংস্কার কাজে কোনও উদ্যোগও সেভাবে নেওয়া হয়নি। দরজা-জানালাগুলি রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে আছে। ওই বাসভবনের তলায় এক সময়ে একটি আর্ট গ্যালারি করা হয়েছিল। ভবনের জরাজীর্ণ দশার কারণে সেই গ্যালারিও জনপ্রিয় হয়নি। এবার সেই ভবনটিকে নিয়েই সুসংহত পরিকল্পনা করতে চাইছে চুঁচুড়া পুরসভা।   নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)