এই সময়: আলিপুরদুয়ারের বক্সায় ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভিতরে বেআইনি নির্মাণ ভাঙা নিয়ে বিতর্কে লক্ষদ্বীপের উদাহরণ সামনে আনল রাজ্য। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে শুনানিতে রাজ্যের কৌঁসুলি তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, লক্ষদ্বীপেও বহু বেআইনি হোটেল, রিসর্ট রয়েছে।
সেগুলি নিয়ে কেউ মাথা না ঘামিয়ে বরং পর্যটন বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। লক্ষদ্বীপে আগে কেউ যেতেন না। এখন সবাই যাচ্ছেন। শেষ ৩-৪ বছরে প্রভূত উন্নতি হয়েছে। পড়াশোনার মান উন্নত হয়েছে। ট্যুরিজম বাড়ছে। গরিবের অন্ন জুটছে।
এ বছরের শুরুতেই কেন্দ্রশাসিত লক্ষদ্বীপে প্রায় সাড়ে এগারোশো কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। রাজ্যের কৌঁসুলির বক্তব্য, পর্যটনের উন্নতি হলে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি হয়। যেমন হয়েছে লক্ষদ্বীপে। কল্যাণের সওয়াল, ‘আমরা বেআইনি নির্মাণের পক্ষে নই। কিন্তু বক্সায় ২৭টি হোম–স্টে ভাঙার যে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত, তা ঠিক নয়। কারণ এই হোম–স্টেগুলি অনুমতি নিয়েই গড়ে উঠেছে। অন্য কোনও বেআইনি নির্মাণ থাকলে, তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিক আদালত।
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ওই ২৭টি হোম–স্টে সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যও তলব করেন। আদালতের বক্তব্য, এগুলির রেজিস্ট্রেশন, মালিকানার তথ্য–সহ যাবতীয় নথি দিতে হবে। পরবর্তী শুনানি ১৩ জুন। রাজ্যের বক্তব্য, ১৯৯৫-১৯৯৬ সাল থেকে পর্যটকরা বক্সায় যাতায়াত শুরু করেন। তাই সেখানে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। কোনও বেআইনি নির্মাণ সাপোর্ট করে না সরকার।
সরকারি আইন মেনে তৈরি হোম–স্টে’র ব্যাপারেই বলছে রাজ্য। ২৭টি হোম–স্টে সম্পর্কে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসকও তাঁর বক্তব্য জানিয়েছেন। এর বাইরে যদি কোনও হোম–স্টে থাকে তার অনুমতি খতিয়ে দেখতে হবে।
বিচারপতি বসুর বক্তব্য, বক্সায় ২৭টির বাইরে কোনও নির্মাণ আছে কি না, কী ভাবে জানা যাবে? সেগুলি চিহ্নিত করতে হবে। রাজ্যের বক্তব্য, ২৭টির বাইরে নির্মাণ থাকলে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিক আদালত। না হলে আদালত অবমাননার মামলা হোক।
নীতির বাইরে কেউ নির্মাণ করে থাকলে তা ভেঙে দিতে হবে। বিচারপতি বসুর বক্তব্য, গ্রিন ট্রাইবুন্যাল জানিয়েছে কোনও বিধি না মেনেই এই সব হোম–স্টে তৈরি হয়েছে। সেই বক্তব্য সত্যি কি না, খতিয়ে দেখে সে ব্যাপারে হলফনামা দিক রাজ্য।
হোম–স্টেগুলির তরফে পেশ হওয়া হলফনামা দেখে বিচারপতির প্রশ্ন, ‘পঞ্চায়েতের তো এখানে কিছু করার নেই! আপনাদের প্রমাণ কোথায় যে আপনারা রেজিস্ট্রার্ড?’ রাজ্যের প্রতি আদালতের বক্তব্য, এই ২৭টি হোম–স্টে বিধি মেনে তৈরি না হলে বন্ধ করান। যদিও এমন কোনও নীতি আদৌ রয়েছে কি না, সে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন মূল মামলাকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত।