এই সময়: সুপ্রিম কোর্টের ১৭ এপ্রিলের নির্দেশের পর স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষিকাদের মধ্যে থেকে ‘নন–টেন্টেড’দের তালিকা তৈরি করেছিল। সেই তালিকা স্কুলশিক্ষা কমিশনার পাঠিয়ে দিয়েছিলেন সব জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শকদের (ডিআই, মাধ্যমিক)। সে–সবের সপ্তাহখানেক পরেও সেই শিক্ষক–শিক্ষিকাদের একাংশ এখনও স্কুলে যোগ দিতে পারেননি। তাই চলতি মাসে তাঁদের সময়ে বেতন পাওয়াও অনিশ্চিত।
স্কুল সার্ভিস কমিশন এমন প্রায় ১৫,৪০৩ জন শিক্ষক–শিক্ষিকার নামের তালিকা তৈরি করেছিল। কিন্তু সেই তালিকায় নানা গোলমাল সামনে আসে। তালিকায় থেকেও স্কুলে যোগ দিতে পারেননি, সোমবারও এমন শিক্ষক–শিক্ষিকার সংখ্যা ১৫০–র বেশি বলেই খবর। আবার এসএসসি–র চেয়ারপার্সন সিদ্ধার্থ মজুমদার কয়েক দিন ধরে সল্টলেকে কমিশনের কেন্দ্রীয় অফিসে ঢুকতে না পারায় সমস্যা বেড়েছে। কারণ, সেখানে অবস্থান–বিক্ষোভ চালাচ্ছেন কলকাতা হাইকোর্ট ও শীর্ষ আদালতে ‘টেন্টেড’ হিসেবে চিহ্নিত শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীরা। সিদ্ধার্থ বৃহস্পতিবার থেকে বিকাশ ভবনেই বসছেন। সোমবার কমিশনের যে সব কর্মী–আধিকারিক অফিসে ঢুকতে পেরেছেন, বেলা গড়াতেই তাঁরাও খাবার ও পানীয় জল নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।
বিকাশ ভবনের খবর, ‘নন–টেন্টেড’ অথচ লিস্টে নাম ছিল না এমন শিক্ষক–শিক্ষিকার সংখ্যা শুক্রবার পর্যন্ত ছিল ৩৫০। এই নিয়ে এসএসসি’র চেয়ারপার্সন ও স্কুলশিক্ষা কমিশনার উদ্যোগী হয়ে শুক্র ও শনিবার ডিআই’দের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। আবার কমিশনার শুক্রবার রাতেই ছ’টি জেলার (কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তর ২৪ পরগনা) ডিআই’কে নির্দেশ দেন, ‘নির্দিষ্ট ভাবে টেন্টেড প্রমাণিত হননি’ তালিকায় অসাবধানে কিছু টেন্টেড প্রার্থীর নামও ফরোয়ার্ড করা হয়েছে। সেই নামগুলি বাদ দিতে হবে’। শনিবার সরকারি ছুটির দিন হলেও এসএসসি–র েচয়ারপার্সন বিকাশ ভবনে বসেই ‘যোগ্য’ ২০০ চাকরিপ্রার্থীর নাম নতুন করে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন।
চাকরিহারা ‘যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার আন্দোলন’–এর কনভেনর চিন্ময় মণ্ডলের নামও বাদ গিয়েছিল। তাতে বিতর্কও তৈরি হয়। সোমবার তাঁর নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। নিজের সোশ্যাল সাইটে চিন্ময়ই সে কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘নন-টেন্টেড’ যে সব শিক্ষক–শিক্ষিকার নাম ভুলবশত ছিল না, তাঁদের নাম আসতে শুরু করেছে। আমার নামও আছে। স্যালারি পোর্টালেও সাবমিট করা হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, শীর্ষ আদালতের রায়ে এই শিক্ষক–শিক্ষিকারা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন ও বেতন পাবেন।