• রাজ্যের ১২৮ পুরসভায় তৈরি হচ্ছে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা আবর্জনার স্তূপে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। রাস্তার ধারেও জমেছে ময়লার পাহাড়। সেই সমস্যা সামাল দিতে এবার বড়সড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের ১২৮টি পুরসভায় এবার বসানো হবে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট। পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর জানিয়েছে, ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট রুল্‌স, ২০১৬’ মেনেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

    এই প্লান্টগুলিতে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য আলাদা করে প্রক্রিয়াকরণ করা হবে। পচনশীল আবর্জনা থেকে জৈব সার ও বায়ো গ্যাস তৈরি হবে, আর প্লাস্টিক জাতীয় অপচনশীল বর্জ্য রিসাইকেল করে প্লাস্টিকের দানা বানানো হবে, যেগুলি দিয়ে নানারকম সামগ্রী তৈরি করা যাবে। এতে যেমন পরিবেশ দূষণ কমবে, তেমনি ভাগাড়ের দুর্গন্ধ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    পুর দপ্তরের খবর অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই কলকাতা, বরাহনগর, দমদম, নিউ ব্যারাকপুর, শিলিগুড়ি, হলদিয়া-সহ বেশ কয়েকটি পুরসভায় এই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে আরও ৯১টি পুরসভায় পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে এই বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা। তবে কোথাও কোথাও একটি পুরসভা থেকে পর্যাপ্ত বর্জ্য পাওয়া না গেলে, দুই বা তিনটি পুরসভার বর্জ্য একত্র করে একটি কেন্দ্রীয় প্লান্টে প্রক্রিয়া করা হবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে।

    রাজ্য সরকার জানিয়েছে, চিহ্নিত ১২৩টি ভাগাড়ে আগে মোট ১৯৮ লক্ষ মেট্রিক টন বর্জ্য জমে ছিল। এর মধ্যে ২৮টি পুরসভার ৪২টি ভাগাড় ইতিমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৬.৫৫ লক্ষ মেট্রিক টন বর্জ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা সম্ভব হয়েছে।

    পুর দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘নগর উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। সেই লক্ষ্যেই রাজ্য সরকার এগোচ্ছে।’ বাড়ি বাড়ি গিয়ে বর্জ্য আলাদা করে সংগ্রহ করার দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ নিয়ম না মানলে জাতীয় পরিবেশ আদালত জরিমানা করতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

    সব মিলিয়ে, এই উদ্যোগ সফল হলে রাজ্যের পুরসভাগুলির বর্জ্য সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)