• আজ বিশেষ হোমযজ্ঞে যোগ দেবেন মমতা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে। তার আগে সোমবারই সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন দিঘার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে তিনি ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার আর্জিও জানিয়েছেন। দিঘায় নেমে মমতা জানিয়েছেন, জগন্নাথ ধামে অধ্যাত্মবাদ ও সম্প্রীতির মিলন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারও দিঘায় পৌঁছেছেন। আজ, মঙ্গলবার মন্দিরে আয়োজিত বিশেষ হোমযজ্ঞে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।

    সোমবার হাওড়ার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড থেকে কপ্টারে চেপে দিঘায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। রওনা হওয়ার আগে রাজ্যবাসীকে সম্প্রীতির বার্তা দেন তিনি। দিঘায় পৌঁছে নবনির্মিত জগন্নাথ ধাম ঘুরে তার স্থাপত্যকাজের প্রশংসা করেন মমতা। পাশাপাশি তিনি জানান, মন্দিরের কারণে দিঘায় পর্যটকদের আনাগোনা আরও বৃদ্ধি পাবে। এই মন্দির বাংলার হাজার হাজার বছরের পুরনো স্থাপত্যকলা তুলে ধরে। এটি একটি কৃষ্টি। এর ফলে দিঘায় আধ্যাত্মিকতা ও পর্যটনের মেলবন্ধন ঘটবে। মন্দির দ্বারোদ্ঘাটনের সময়ও জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। বুধবার দুপুর আড়াইটে থেকে তিনটের মধ্যে এই শুভ কাজ সম্পন্ন হবে। তারপরই সর্বসাধারণের জন্য তা খুলে দেওয়া হবে। এত দ্রুত মন্দির তৈরির জন্য ‘হিডকো’কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। মমতার কথায়, ‘এই সমুদ্রের পাড়েই শ্রীচৈতন্যদেব জগন্নাথদেবের প্রেমে লীন হয়ে গিয়েছিলেন। সেই ইতিহাস আমাদের বাংলারই।’

    দিঘার মুকুটে একটি নতুন পালক জুড়ে যাওয়ায় আশার আলোক দেখছেন সেখানকার হোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা। তাঁদের দাবি, রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পর থেকে দিঘায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে বাঁধানো সৈকত। সন্ধ্যার পর এই এলাকা বেশিরভাগ সময়ই অন্ধকারে ডুবে থাকত। কিন্তু বর্তমানে এই সমস্যাও মিটেছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানে প্রচুর উন্নতমানের হোটেল তৈরি করছেন ব্যবসায়ীরা। পরিবহন ব্যবস্থারও উন্নতি হয়েছে। সেই কারণে ২–৩ দিনের ছুটি কাটাতে বর্তমানে বাঙালির প্রথম পছন্দ দিঘা। সেখানেই এ বার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে দিঘার আকর্ষণ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। এর ফলে শ্রীবৃদ্ধি হবে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মানুষদের।

    গত বৃহস্পতিবার থেকে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে চারটি কুণ্ডের মাঝে মহাকুণ্ড জ্বালিয়ে যজ্ঞ হচ্ছে। গর্ভগৃহে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবতাকে আহ্বান জানানো হয়েছে। জগন্নাথদেবের বসার পিঁড়ির পুজোও করা হয়েছে। দুধ দিয়ে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা এবং সুদর্শনের স্নান সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও লক্ষ্মী, বিমলা, সত্যভামা-সহ সমস্ত দেবদেবীর মূর্তিকেও স্নান করানো হয়েছে। চন্দননগরের আলোয় সেজে উঠেছে সৈকতনগরী। পাশাপাশি শহরজুড়ে বাজছে মাঙ্গলিক সানাইয়ের সুর। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মন্দিরে হোমযজ্ঞ চলবে। গত কয়েকদিন ধরে মন্দিরে উপস্থিত রয়েছেন পুরীর মন্দিরের রাজেশ দয়িতাপতি, ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস সহ অনেকে। তাঁদের উদ্যোগেই সমস্ত আচার সম্পন্ন হচ্ছে। এই আবহে নিরপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা দিঘা শহর। মন্দির চত্বরে প্রায় ৮০০ পুলিশকে মোতায়েন করা হচ্ছে। মন্দির উদ্বোধনের জন্য শহরের বিভিন্ন রাস্তার যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)