সন্দেশখালির শাহজাহানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট চাইল হাই কোর্ট, সাত দিন সময় সিবিআইকে
আনন্দবাজার | ২৯ এপ্রিল ২০২৫
বছরখানেক আগে ইডি আধিকারিকদের উপর আক্রমণের ঘটনায় এ বার সন্দেশখালির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। সিবিআই ওই মামলার তদন্ত করছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে ওই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআইকে। এমনটাই নির্দেশ উচ্চ আদালতের।
মঙ্গলবার হাই কোর্টে বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের নির্দেশ, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলকে। আগামী ৭ তারিখ এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। মঙ্গলবার আদালতে সিবিআই জানায়, এই মামলায় তদন্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট তারা আদালতে পেশ করতে চায়। এর পরেই সিবিআইকে এক সপ্তাহ সময় দেন বিচারপতি ঘোষ।
গত বছর ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। সেখানে তাঁদের উপর চড়াও হন গ্রামবাসীদের একাংশ। যদিও কয়েকটি মহলের দাবি, হামলাকারীরা সকলেই ছিলেন শাহজাহানের অনুগামী। এর দিন কয়েক পরেই ওই ঘটনায় শাহজাহানকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। পরে তাঁকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই মামলায় জামিন চেয়ে সম্প্রতি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শাহজাহানের আইনজীবী। শাহজাহানের আইনজীবীর বক্তব্য, ওই মামলায় গত ১৫ মাস ধরে জেলে রয়েছেন তাঁর মক্কেল। অভিযোগের সারবত্তাও প্রমাণিত হয়নি। তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। যদিও শাহজাহানের জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই জানিয়েছে, এই মামলায় তদন্তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে। শীঘ্রই সে সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট আদালতের পেশ করবে তারা।
২০২৪ সালের গোড়ায় রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে এসে আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিক ও আধাসেনা জওয়ানেরা। তার পর থেকেই পলাতক ছিলেন শাহজাহান। অন্য দিকে, ইডির উপর হামলার অভিযোগ ওঠার কয়েক দিন পর থেকেই সন্দেশখালিতে শাহজাহান এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন স্থানীয়দের বড় অংশ। এলাকার অনেকের কৃষিজমি জবরদখল, সেই অধিকৃত জমিতে মাছের ভেড়ি বানানো, ভেড়ির লিজ়ের টাকা না দেওয়ার মতো নানা অভিযোগ ওঠে শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে স্থানীয় মহিলাদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগও সামনে আসে। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি। সেই আবহে শাহজাহানকে দল থেকেও সাসপেন্ড করে তৃণমূল। এর কিছু দিন পরেই রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। শাহজাহানকে তুলে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। এখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি শাহজাহান। গত প্রায় ১৫ মাস ধরে সেখানেই রয়েছেন তিনি।