• স্ত্রী ‘ভাই’ পাতিয়েছিল, তবু স্বামীর সন্দেহ যায়নি, এক যুগ আগের খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন যুবকের
    এই সময় | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • স্ত্রীর সঙ্গে বন্ধুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ ছিল যুবকের। সেই সন্দেহই তাঁকে ১২ বছর আগে সাংঘাতিক অপরাধের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। বন্ধুকে খুনের অপরাধে নাম জড়িয়েছিল তাঁর। এক যুগ পর সেই অপরাধের সাজা ঘোষণা হলো মেদিনীপুর জেলা আদালতে। দোষী সাব্যস্ত হলেন ডেবরার বাদল সোরেন। বিচারক বাদলকে দোষী সাব্যস্ত করে মঙ্গলবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড।

    ডেবরার একটি এলাকায় দিনমজুরির কাজ করতে গিয়ে বাদল সোরেনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়ার শ্রীদাম মুর্মুর। বন্ধুত্বের সূত্রেই বাদলের বাড়িতে যাতায়াত শুরু হয় শ্রীদামের। শ্রীদামের বয়স ৩০, বাদল তাঁর থেকে বছর পাঁচেকের বড়। বেশ ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তাঁদের।

    তবে একটা সময়ের পর ঘন ঘন শ্রীদামের ডেবরার বাড়িতে আসা পছন্দ হতো না বাদলের। বাদলের স্ত্রী আবার শ্রীদামকে ভাই পাতান। ফলে তাঁদের মধ্যেও সম্পর্ক ভালো হয়। কিন্তু বাদল ভাবতেন, স্ত্রীর সঙ্গে শ্রীদামের যে সম্পর্ক, তা ভাই-দিদির নয়। তা থেকেই বদলা নেওয়ার মানসিকতা তৈরি হয় বাদলের। অভিযোগ, একদিন রাতে একসঙ্গে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। সেই সময়ই শ্রীদামকে কুপিয়ে খুন করেন বাদল।

    ২০১৩ সালের ৭ অগস্ট। রাতে কাজ সেরে একসঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎই শ্রীদামকে আক্রমণ করেন বাদল। রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শ্রীদাম। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর পালিয়ে যান বাদল। পরের দিন ডেবরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শ্রীদামের দিদি রাইমণি মুর্মু। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে বাদলকে গ্রেপ্তার করে ডেবরা থানার পুলিশ।

    দ্রুত তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে নভেম্বর মাসের মধ্যে পুলিশ চার্জশিট জমা দেয় আদালতে। বিচার শুরু হলে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। ১২ বছর আগের সেই ঘটনায় অভিযুক্ত বাদল সোরেনকে সোমবার দোষী সাব্যস্ত করেন মেদিনীপুর জেলা আদালতের বিচারক সেলিম শাহি। মঙ্গলবার তিনিই সাজা ঘোষণা করেন।

    সরকারি আইনজীবী শক্তিপদ দাস অধিকারী বলেন, দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক। আদালতের রায়ে খুশি শ্রীদামের পরিবার। জানায়, প্রথম থেকেই আদালতের উপর তারা ভরসা রেখেছিল। সুবিচার পেল তারা।

  • Link to this news (এই সময়)