পুকুর বোজানোর চেষ্টা, দ্রুত সংস্কারের নির্দেশ দিয়ে নোটিস পাঠাচ্ছে পুরসভা
বর্তমান | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: সিউড়ি পুরসভা এলাকায় একাধিক পুকুর ভরাটের চক্রান্ত চলছে! ইতিমধ্যে এ নিয়ে শহরের নানা প্রান্তের বাসিন্দারা বিভিন্ন সময় পুরসভার দ্বারস্থও হয়েছেন। অন্য দিকে, পুরসভা কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, পুকুর বুজিয়ে প্লটিং করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পুর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে পুকুর মালিকদের চিহ্নিত করে নোটিস পাঠানোর কাজ শুরু করেছে। পুরসভার বক্তব্য, নোটিস পাঠানোর পরও মালিকদের তরফে পুকুর সংস্কারের ক্ষেত্রে কোনও উদ্যোগ না নেওয়া হলে আগামীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, অধিকাংশ পুকুরের মালিক শহরের বাইরে থাকায় তাঁদের নোটিস পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে বেশকিছু পুকুর মালিককে ইতিমধ্যে নোটিস পাঠানো হয়েছে। দ্রুত পুকুর আগের অবস্থায় ফেরানোর ক্ষেত্রে মালিক পক্ষ উদ্যোগ না নিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শহর সিউড়িতে ১০০-র বেশি পুকুর রয়েছে। বেশিরভাগ পুকুরেই এক সময় মাছ চাষ হতো। এছাড়াও গৃহস্থালির নানা কাজে পুকুরের জল ব্যবহার করা হতো। তবে বর্তমান সময়ে বেশকিছু পুকুর ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। অভিযোগ, ব্যক্তি মালিকানাধীনে থাকা পুকুর গুলি নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। ফলে ওই সব পুকুর নোংরা আবর্জনায় ভরতে শুরু করেছে। দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে অবহেলায় পড়ে থাকায় পুকুরগুলিতে জন্মেছে আগাছাও ।একাধিক পুকুর মালিক সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে চাইছে। আবর্জনায় ভরা পুকুর বুজিয়ে প্লটিং করার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। বিষয়টি পুরসভার চেয়ারম্যানের কানে পৌঁছতেই তিনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। নোংরা আবর্জনায় ভরে থাকা পুকুরগুলি চিহ্নিত করে মালিক পক্ষকে নোটিস পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে একাধিক পুকুর মালিককে নোটিস পাঠানো হয়েছে। তবে বেশকিছু পুকুরের মালিকের হদিস পায়নি পুরসভা কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় উদ্বিগ্ন পুরসভা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি উপর মহলে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নোংরা আবর্জনায় ভরে থাকা পুকুর সংস্কারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পুরসভা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। যদিও সিউড়ি পুরসভা কর্তৃপক্ষ অবশ্য ফান্ডের অভাবে সেই কাজ করে উঠতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে মালিক পক্ষ দ্রুত পুকুর সংস্কারের কাজে হাত না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। মন্থরগতিতে চোখের সামনে পুকুর বোঝানোর অপচেষ্টা শুরু হলেও অজানা ভয়ে শহরের বাসিন্দারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ। পুর এলাকার একাধিক ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বলেন, একটা সময় শহরের প্রায় প্রতিটা পুকুরেই কমবেশি মাছ চাষ হতো। পুজোর পর বেশকিছু পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন করা হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে পুকুরগুলি নোংরা আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেই। মালিক পক্ষ এক্কেবারে চুপ। আমাদের আশঙ্কা পুকুর বুজিয়ে নির্মাণ কাজ করা হতে পারে। আমরা চাই পুরসভা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে পুকুরগুলি সংস্কার করুক। নইলে শহরের বুক থেকে এক এক করে জলাভূমি গুলি হারিয়ে যাবে। জেলা বিজেপির সহ সভাপতি দীপক দাস বলেন, পুরসভার সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। এবিষয়ে পুরসভাকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। পুরসভা চাইলে নিজেই পুকুর সংস্কার করতে পারে।