দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের ভাস্কর্য দেখে আপ্লুত সেলিব্রিটিরা
বর্তমান | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
শ্রীকান্ত পড়্যা, দীঘা: রাজনীতি থেকে চলচ্চিত্র। সঙ্গীত থেকে ক্রীড়া। শিক্ষাবিদ থেকে বিশিষ্টজন। সমাজের সর্বস্তরের সেলিব্রিটিদের নিয়ে মঙ্গলবার দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরে মহাযজ্ঞ হল। মধ্যমণি অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুণ্যাহুতি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন রামকৃষ্ণ মিশন, জয়রামবাটি ও কামারপুকুর, আদ্যাপীঠ, দক্ষিণনেশ্বর ও বেলুড় মঠের সাধু-সন্ন্যাসীরাও। প্রচারে আলো শুষে নিয়েছিলেন শোভন-বৈশাখী কিংবা মদন মিত্রের মতো বহু চর্চিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও। জগন্নাথ মন্দিরের ভাস্কর্য দেখে আপ্লুত সকলেই। কেউ কেউ মন্তব্য করলেন, ‘বাংলায় অবিশ্বাস্য ইতিহাস রচিত হল। লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
এদিন মন্দিরে প্রবেশ অবাধ থাকবে বলে অনেকেই আশা করে ভিড় করেছিলেন। কিন্তু, সিকিউরিটি পাস ছাড়া মহাযজ্ঞের সামনে কাউকে যেতে দেওয়া হয়নি। হতাশ ভক্তদের উদ্দেশ্যে নিরাপত্তারক্ষীরা ঘোষণা করেন, বুধবার উদ্বোধনের পরই সকলের জন্য মন্দিরের দ্বার খুলে যাবে। এদিন বেলা দু’টো থেকেই অতিথিরা জগন্নাথ মন্দিরে মহাযজ্ঞের সামনে পৌঁছতে শুরু করেন। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের মধ্যে পুলক রায়, অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল সেন প্রমুখ ছিলেন। এছাড়াও সেলিব্রিটিদের মধ্যে সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মালিয়া, বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও লাভলী মৈত্র ও অদিতি মুন্সি সহ আরও অনেকেই ছিলেন। বিশিষ্ট গায়ক নচিকেতা, সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় থেকে ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার এবং মোহনবাগান কর্তা দেবাশিস দত্তের মতো ব্যক্তিত্বরাও ছিলেন।
মন্দিরের গেটে ঢোকার মুখে মদন মিত্র এবং শোভন-বৈশাখীদের ঘিরে ধরেন সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা। আমজনতাও তাঁদের ছবি মোবাইল বন্দি করতে প্রতিযোগিতা শুরু করে দেন। সবার আবদার মিটিয়ে হাসিমুখে তাঁরা গেটে আমন্ত্রণপত্র দেখিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক, মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী সহ শাসক দলের বিধায়করা উপস্থিত ছিলেন। উত্তরবঙ্গ থেকেও সংসদ সদস্য, বিধায়করা জগন্নাথ মন্দিরে মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে সাক্ষী ছিলেন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবকরা মহাযজ্ঞ করেন। দুই কুইন্টাল ঘি এবং ১০০ কুইন্টাল আম ও বেলকাঠ দিয়ে মহাযজ্ঞ হয়। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দীঘার জগন্নাথ মন্দির দেখে একেবারে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গেলাম। এই সৃষ্টি যতদিন থাকবে মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম মনে রাখবেন। তিনি গোটা রাজ্য তথা দেশবাসীর মঙ্গল কামনায় যজ্ঞ করলেন। মদন মিত্র বলেন, দীঘায় এক অবিশ্বাস্য ইতিহাস রচিত হল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করলেন তা একথায় অনন্য। জুন মালিয়া বলেন, দীঘা শুধু পর্যটন কেন্দ্র নয়, এবার থেকে তীর্থস্থান হিসেবেও পরিচিতি পেল। মন্দিরের ভাস্কর্য দেখে শিহরিত হয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে দীঘা আগামী দিনে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আজ, বুধবার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ঘাটালের সাংসদ দীপক (দেব) অধিকারী। তার পরেই সবার জন্য খুলে যাবে মন্দিরের মূল প্রবেশ দ্বার।