• সৈকত শহরে ব্যবসার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে জগন্নাথের মন্দির
    বর্তমান | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাঁথি: সৈকত শহর দীঘা এবার তীর্থক্ষেত্রও। আজ ৩০ এপ্রিল, বুধবার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে সৈকত শহরে ব্যবসার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলে আশাবাদী স্থানীয়রা। জগন্নাথদেবের কৃপায় লক্ষ্মীর ঝাঁপি আরও ফুলে ফেঁপে উঠবে। মন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে নতুন নতুন দোকান। বিকল্প আয়ের দরজা খুলে যাবে। বদলে যাবে দীঘা ও আশপাশের এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক হাল। এককথায় জগন্নাথ মন্দির গড়ে ওঠায় স্থানীয় অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে। আজ, অক্ষয় তৃতীয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে খুলে যাবে জগন্নাথ মন্দিরের দ্বার। যার দিকে চেয়ে রয়েছে গোটা বাংলা। 

    বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দীঘার খোলনলচে পাল্টে গিয়েছে। যত দিন গিয়েছে, আরও মোহময়ী হয়ে উঠেছে দীঘা। এখন আট থেকে আশি সকলের পছন্দের ‘উইক এন্ড ডেস্টিনেশন’ এই সৈকত শহর। এবার দীঘার মুকুটে নতুন পালক জুড়ল। আগে ছিল শুধুই সমুদ্র দর্শন। এবার বাড়তি পাওনা দেবদর্শন। জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনকে সামনে রেখে দীঘা নবরূপে, নব আঙ্গিকে সেজে উঠেছে। অল্প ছুটিতে ভ্রমণপিপাসু মানুষ বেরিয়ে পড়েন সমুদ্র দর্শনে। সেই সমুদ্রপাড়েই জগন্নাথ মন্দির আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্যবাসীর কাছে। আগামী দিনে জগন্নাথ মন্দিরের আকর্ষণে রাজ্যের বাইরে থেকেও পর্যটকরা আসবেন বলে মনে করছেন হোটেল মালিকরা। দীঘায় দেড় হাজারের বেশি হোটেল-লজ রয়েছে। রামনগর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকার একটি বড় অংশের মানুষের রুটি-রুজি দীঘার পর্যটন ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। দীঘা এক হোটেল মালিক দেবব্রত দাস বলেন, জগন্নাথ মন্দির আমাদের কাছে বাড়তি পাওনা। সামনেই গরমের ছুটি রয়েছে। এই সময়টা দীঘায় ভিড় বাড়ে। মন্দির উদ্বোধন হওয়ার পর তা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, এতদিন জগন্নাথদেবের দর্শন করতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ পুরী ছুটতেন। কিন্তু সকলে তো যেতে পারেন না। তাঁরা নয়া তীর্থক্ষেত্র দেখতে দীঘায় আসবেন। এদিকে, দীঘায় মন্দির উদ্বোধন হওয়ায় লাগোয়া ওড়িশার বালেশ্বর জেলার চন্দনেশ্বর সহ উদয়পুর, সাহবাজিপুর, পদ্মপুর, গমভারিয়া প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারাও খুশি। এখান থেকে পুরী অন্তত ৩৪৩ কিলোমিটার দূরে। সাহবাজিপুরের বাসিন্দা গীতা মল্লিক বলেন, অত দূরে পুরীর মন্দির। একবারই দর্শন করে এসেছি। ভেবে রেখেছি, দীঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হয়ে গেলে পরিবারের লোকজন নিয়ে মহাপ্রভুর দর্শন করে আশীর্বাদ নিয়ে আসব। উদয়পুরের বাসিন্দা বিপ্লব বেহেরা দীঘায় অটো চালান। তিনি বলেন, জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হয়ে গেলে দীঘায় সারাবছর পর্যটক ও পুণ্যার্থীরা আসবেন। দুটো টাকা বেশি রোজগার করতে পারব। অনেকেরই বিকল্প আয়ের দরজা খুলে গেল। দীঘার একটি হোটেলে কাজ করেন ওড়িশার বিচিত্রাপুরের রাজা জেনা। তিনি বলেন, পুরী তো রয়েছেই। দীঘাতে জগন্নাথদেবের মন্দির তৈরি হওয়ায় মহাপ্রভুর দর্শন আরও সহজ হয়ে গেল।  দীঘার ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও একটা নতুন দিক উন্মোচিত হবে।  
  • Link to this news (বর্তমান)