বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে স্থাপত্য ও ভাস্কর্য রক্ষণাবেক্ষণ খতিয়ে দেখল এএসআই
বর্তমান | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, বোলপুর: বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে স্থাপত্য ও ভাস্কর্য রক্ষণাবেক্ষণ খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার শান্তিনিকেতন প্রদর্শন করল এএসআইয়ের (আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া) এর কলকাতা শাখার প্রতিনিধিরা। তিন সদস্যের ওই প্রতিনিধি দল মূলত, ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের আওতায় থাকা পাঠভবন, সন্তোষালয় ও কলাভবন ঘুরে দেখেন। কলাভবনের বিশিষ্ট শিল্পী বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের তৈরি ম্যুরালগুলি কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়, সে বিষয়েও আলোকপাত করেন। তবে সূত্রের খবর, ক্যাম্পাসের রক্ষণাবেক্ষণের ধরণ নিয়ে সন্তুষ্ট নয় ওই দল। পরিদর্শনের এই রিপোর্ট শীঘ্রই বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে তারা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠার সূচনা লগ্নে আচার্য নন্দলাল বসু, রামকিঙ্কর বেজ প্রমূখ বিশিষ্টজন সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে শান্তিনিকেতন ক্যাম্পাসে তৈরি করেছিলেন বিভিন্ন স্থাপত্য ও ভাস্কর্য। তার মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী কালোবাড়ি, কলের বাঁশি, সাঁওতাল পরিবার, বুদ্ধ, গান্ধী, সুজাতার মূর্তি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। পরবর্তীতে সেগুলি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জটিল সংস্কারের ক্ষেত্রে বিশ্বভারতী অনেক সময় এএসআইয়েরও দ্বারস্থ হয়েছে। তাদের হাত ধরে রবীন্দ্রভবনের শ্যামলী, পাঠভবনের চৈত্য প্রভৃতি মাটির বাড়িগুলি পূনঃসংস্কার হয়েছে। ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতি পাওয়ার পর ক্যাম্পাসের রক্ষণাবেক্ষণ আরও গুরুত্ব পেয়েছে। তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠিত হয়েছে হেরিটেজ সেল। তাই রক্ষণাবেক্ষণ খতিয়ে দেখতে মাঝেমধ্যেই এএসআইয়ের প্রতিনিধি দল শান্তিনিকেতন ঘুরে দেখে। তার প্রেক্ষিতেই এদিন এএসআইয়ের কলকাতার শাখার বিজ্ঞান বিভাগের আধিকারিকরা হেরিটেজ সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। সেই দলে ছিলেন এএসআইয়ের কলকাতা শাখার ডেপুটি সুপারিনটেনডিং আর্কিওলজিস্ট বিনয় প্রসাদ গুপ্ত, ডঃ মহুয়া উপাধ্যায় সহ আরও এক আধিকারিক। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো ও শান্তিনিকেতন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ম্যানেজার অনিল কুমার তাদের ক্যাম্পাস ঘুরে দেখান। পাঠভবন, সন্তোষালয় প্রভৃতি জায়গা ঘুরার পর সব শেষে তারা কলাভবন পরিদর্শন করেন। তাদের ঘুরে দেখান ভবনের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ মিত্র। বিজ্ঞান বিভাগের দলটি মূলত ক্যাম্পাসে থাকা বিনোদ বিহারী মুখোপাধ্যায়ের ম্যূরালগুলি খতিয়ে দেখেন। সেগুলি “কেমিক্যাল প্রসেস” এ সংস্কার করা যায় কিনা তা নিয়েই আলোচনা হয় এমনটাই এক আধিকারিক জানিয়েছেন। তবে রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে কিছুটা হল অসন্তুষ্ট ছিলেন ওই প্রতিনিধি দল, এমনটাই বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে। যেহেতু এই মুহূর্তে শান্তিনিকেতন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পেয়েছে তাই সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তার জন্য এএসআই সবরকম সহায়তা করতে প্রস্তুত বলেও আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন– এমনটাই বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিনে পরিদর্শন প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, ওই প্রতিনিধি দল ঘুরে দেখার পর বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপোর্ট দেবেন বলে জানা গিয়েছে। তার ভিত্তিতে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।