• ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হুগলির ২ ব্লক
    বর্তমান | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: তীব্র কালবৈশাখি ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে হুগলির দু’টি ব্লক। মূলত চাষের জমিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের একাধিক স্তম্ভ। একই সঙ্গে বেশ কিছু এলাকায় বসতবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত। 

    হুগলির সিঙ্গুর ও পোলবা-দাদপুর ব্লকে সোমবার রাতে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় কালবৈশাখি। সঙ্গে দোসর শিলাবৃষ্টি। মঙ্গলবার দুই এলাকায় যায় কৃষিদপ্তর ও প্রশাসনের টিম। ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। কৃষিদপ্তরের প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, ধানের ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সব্জি ও তৈলবীজের চাষও ক্ষতির মুখে। ক্ষতিগ্রস্ত আমের ফলনও। সোমবার রাতের আগে আরও দু’বার হুগলিতে কমবেশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ফলে সার্বিকভাবে আমের ফলন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

    হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মদনমোহন কোলে সিঙ্গুর থেকে নির্বাচিত। তিনি বলেন, সিঙ্গুর ও পোলবা-দাদপুরে ঝড় ও শিলার কারণে ফসলের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি দ্রুত বোঝা যায় না। কিন্তু অনেক কাঁচা আম পড়ে গিয়েছে। পোলবার বীরেন্দ্রনগরের চাষি গোবিন্দ কোলে বলেন, বড় আকারের শিলা পড়েছে। ধানের চাষ নষ্ট হয়েছে। সঙ্গে শশা, তিল, ঝিঙে, বেগুনের চাষও মাটি হয়ে গিয়েছে। সিঙ্গুরের এক কৃষক বলেন, সব্জির বিরাট ক্ষতি হয়েছে। পাকা ধানও ক্ষতিগ্রস্ত। হুগলির উদ্যানপালন আধিকারিক শুভদীপ নাথ বলেন, শিলাবৃষ্টির কারণে আমের ক্ষতি দ্রুত বোঝা যায় না। আঘাত পাওয়া আম ধীরে ধীরে পচে যায়। পাকা পর্যন্ত পচন চলতে পারে। আমরা ক্ষতির পর্যালোচনা করছি।

    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সিঙ্গুর ও পোলবা-দাদপুর দু’টি ব্লকেই এক ঘণ্টার কম সময় ঝড় হয়েছে। শিলাবৃষ্টির সময়ও কম ছিল। কিন্তু তাতেই বিরাট ধ্বংসলীলা চালিয়ে গিয়েছে। সিঙ্গুরে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত গোপালনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। সেখানকার বাবুরভেড়ি, সিংহেরভেড়ি, দেওয়ানভেড়ি, পায়রাওড়া সহ বিরাট এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কৃষকদের চাষের জমি নষ্ট করে দিয়েছে। একাধিক এলাকায় বিদ্যুৎবাহী তারের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। স্থানীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৭০০ হেক্টর জমির ফসল মাটিতে মিশেছে। দেড়শোর কাছাকাছি বাড়ি নষ্ট। প্রায় ৩৫টি বিদ্যুতের তারবাহী খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত অনেক এলাকায় বিদ্যুৎসংযোগ ছিল না। পোলবার আমনান পঞ্চায়েত, হারিট গ্রাম পঞ্চায়েতে মূলত ক্ষয়ক্ষতি হয়। আমনানের বীরেন্দ্রনগর, ডাকাতিয়াভেরি, ডুবিরভেরি, নতুনভেরি এবং হারিটের প্রেমনগর, মথুরাপুর এলাকায় তীব্র ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের তরফে দাবি, শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ের দাপটে ধানের পাকা শিষ মাটিতে মিশে গিয়েছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)