• সেই ঝাঁজ কই! আজ কি দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরে দাবাং দিলীপ?
    এই সময় | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়: দাবাং দিলীপ ঘোষ কি বিয়ে করে পাল্টে গেলেন? কোথায় গেল তাঁর সেই রণং–দেহি মেজাজ? সেই চেনা ঝাঁজ? প্রশ্নগুলি ভাসছে বিজেপির অন্দরমহলে। তার অবশ্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যাখ্যাও আছে। কারণ, যে দিলীপ ঘোষ কথায় কথায় তৃণমূল নেতাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিতেন, আজ, বুধবার দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দেখা যেতে পারে তাঁকেও!

    রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আজ দিলীপের দিঘা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। দিলীপের ‘জগন্নাথ দর্শন’–এর ইচ্ছের কথা জানতে পেরে ভুরু কোঁচকাচ্ছেন বঙ্গ–বিজেপি নেতৃত্বের অনেকেই। দিলীপ অবশ্য এর মধ্যে ‘অন্য রকম’ কিছু দেখছেন না।

    তাঁর সাফ কথা, ‘ভগবান নিয়ে রাজনীতি নয়। আমাকে রাজ্যের মুখ্যসচিব আমন্ত্রণ করেছেন। যাওয়ার ইচ্ছে আছে। বুধবার পূর্বনির্ধারিত কিছু কর্মসূচি আছে। সে সব মিটিয়ে সময় বের করতে পারলে ঘুরে আসব।’ আদৌ তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়ার জন্য ‘সময়’ বের করতে পারলেন কি না, সেটা সময়ই বলবে।

    তবে রাজ্য বিজেপির একাংশের মতে, দিলীপের দিঘা যাওয়ার ইচ্ছেটাই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ক’দিন আগেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকার নির্মিত জগন্নাথ মন্দির নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই সব প্রশ্নের সদুত্তর না–পে‍লে তিনি যে রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দেবেন না, সেটাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। এই আবহে দিলীপের দিঘা যাওয়ার ইচ্ছে যে সত্যিই ইঙ্গিতবাহী, তাতে স‍ন্দেহ নেই।

    দিঘা যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশটা কোনও ব্যতিক্রম নয়, ইদানীং দিলীপের আরও কিছু আচরণ চিন্তায় ফেলেছে গেরুয়া ব্রিগেডকে। আগের সেই দাবাং দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তারা অনেকেই মেলাতে পারছেন না বিবাহিত দিলীপকে। অতীতে যখনই ভারত–পাক সম্পর্কের টানপড়েন তৈরি হয়েছে, তখনই দিলীপকে খড়্গহস্ত হতে দেখা গিয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।

    এ বারও দিলীপ যে তোপ দাগছেন না, এমনটা নয়। কিন্তু পদ্মের অনেকের অভিমত, তাতে ঝাঁজ যেন কিছুটা কম। পহেলগামে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে দিন কয়েক আগে শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিধানসভার গেটের বাইরে পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়েছিলেন বিজেপি বিধায়করা। যদিও, তা পছন্দ হয়নি দিলীপের। এ বিষয়ে তিনি প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, কোনও দেশের পতাকা পোড়ানো ঠিক নয়। বাংলাদেশ যা করতে পারে, সেটা আমাদের শোভা পায় না।’

    রোজই অবশ্য নিয়ম করে তৃণমূলকে নিশানা করছেন দিলীপ। রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও তুলছেন। সেখানেও দিলীপের ‘মিডিয়া বাইট’–এ চেনা ঝাঁজ খুঁজে পাচ্ছেন না বঙ্গ–বিজেপির একাংশ। পদ্মের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘দি‍লীপদার প্রতিরোধের ডাকে দলীয় কর্মীদের রক্ত গরম হয়।

    ২০২১–এর বিধানসভা ভোটের আগে ওঁর তৃণমূলের রুখে দাঁড়ানোর বার্তা নিচুতলার কর্মীদের মনোবল বাড়িয়ে দিত। কখনও তিনি দাগি তৃণমূল নেতার বুকে পা তুলে দেওয়ার কথা বলেছেন, কখনও সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় গিয়ে তৃণমূলের চোখে চোখ রেখে পাল্টা মারের কথা বলে আসতেন। সেই দিলীপদাই রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে দিঘা যাওয়ার কথা ভাবছেন শুনে অবাক লাগছে। মেলাতে পারছি না।’

    বিজেপির এক যুব নেতার সরস মন্তব্য, ‘এই তো কয়েক সপ্তাহ আগে দিলীপদার বিয়ে হলো। কিছুদিন সময় তো দিতে হবে। ফর্মে ফিরতে কিছুটা সময় তো লাগবে।’

  • Link to this news (এই সময়)