জগন্নাথ মন্দিরে ধ্বজা উত্তোলকদের ১০ লক্ষ টাকার বিমা, দিঘায় মানবিক পদক্ষেপ মমতার
প্রতিদিন | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
বিশেষ সংবাদদাতা, দিঘা: দিঘার মন্দিরের চূড়ায় নিত্যদিন যাঁরা ধ্বজা পরিবর্তন করবেন, সেই ধ্বজা উত্তোলকদের জন্যও মানবিক পদক্ষেপ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়িত্বশীল প্রশাসকের নজির গড়ে প্রত্যেক ধ্বজা উত্তোলকের জন্য মাথাপিছু ১০ লক্ষ টাকার বিমা করিয়ে দিলেন তিনি। পুরীর মন্দিরে এঁরাই বংশ পরম্পরায় ধ্বজা উত্তোলনের কাজ করেন। তাঁদেরই তিনজন দিঘায় প্রতিদিন বিকেলে ধ্বজা পরিবর্তন করবেন। এরজন্য পারিশ্রমিকও পাবেন তাঁরা।
মঙ্গবার দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে পুজো শেষে বিকেল ৩টে ৫০ মিনিটে পুরীর মন্দিরের নামে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ধ্বজা তুলে দেন রাজেশ দৈতাপতি। এরপর মুখ্যমন্ত্রী সেই ধ্বজা পুরী থেকে আসা অভিজ্ঞ ধ্বজা উত্তোলক বিভূতি দাসের হাতে দেন। দ্রুত তিনি মন্দিরের ভিতর দিয়ে চূড়ার শীর্ষে ধাতব ‘শ্রী চক্রে’র উপরে ওঠেন। যতক্ষণ বিভূতি উপরে উঠছিলেন, ততক্ষণ উৎকণ্ঠা নিয়ে হাত জোড় করে মন্দির চূড়ায় তাকিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ধ্বজা উত্তোলক নেমে আসতেই কাছে ডেকে নিয়ে মাথাপিছু ১০ লক্ষ টাকার বিমা ঘোষণা করেন মমতা। সূত্রের খবর, পুরী থেকে আসা বিভূতি ছাড়াও অজয় নায়েক-সহ তিনজন ধ্বজা উত্তোলকের কাজ করবেন দিঘার মন্দিরে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে পুরীর নিয়মে দিঘায় জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠায় শুরু হয় আচার-অনুষ্ঠান। সোমবার শুরু হয়েছে পুজোপাঠ ও হোমযজ্ঞ। জগন্নাথদেবের মূল মন্দিরের সামনে হোমযজ্ঞ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল অস্থায়ী আটচালা ঘর। পুরীর মন্দির থেকে ৫৭ জন জগন্নাথদেবের সেবক এবং ইসকন থেকে ১৭ জন সাধু তাতে শামিল হন। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘায় পৌঁছন। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুয়ায়ী, ২৯ এপ্রিল বিশ্বশান্তির জন্য হয় মহাযজ্ঞ। ১০০ কুইন্টাল আম ও বেলকাঠ এবং ২ কুইন্টাল ঘি পোড়ানো হয়। মহাযজ্ঞে পূ্র্ণাহুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের হাতে আরতিও করেন। বলেন, মা-মাটি- মানুষের জন্য তিনি পুজো দিয়েছেন। মমতার কথায়, “মা-মাটি-মানুষ ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকব।”
সূচি অনুযায়ী আজ ৩০ এপ্রিল, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই মন্দিরের দ্বারোদঘাটন ও জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বিধান অনুযায়ী তা করবেন পুরীর রাজেশ দৈতাপতি। মন্দির উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে জেলা, রাজ্য, প্রতিবেশী রাজ্যের বহু পুণ্যার্থী এসেছেন সৈকত শহর দিঘায়। সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। যাঁরা মন্দির দর্শনে যাবেন, তাঁরা ওল্ড দিঘা থেকে ১১৬ বি জাতীয় সড়ক ধরে তিন কিলোমিটার হেঁটে মন্দিরে পৌঁছতে পারবেন। নিউ দিঘা বাস ডিপো থেকে আসবেন তাঁরাও, ১১৬ বি জাতীয় সড়ক ধরে শনিমন্দিরের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়া যাবে।