বিশেষ সংবাদদাতা, দিঘা: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনা সামনে রেখে দেশে যখন হিন্দু-মুসলিম রাজনীতির বিষ বাষ্প ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, তখন দিঘার জগন্নাথধাম থেকে এই কঠিন সময়ে সম্প্রীতির নিশান উড়িয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই মন্তব্য করেছেন সাংসদ-অভিনেতা দেব।
মন্দির উদ্বোধনের আগের সন্ধ্যায় দিঘায় মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে সমাজের বিভিন্নক্ষেত্রের অতিথি-অভ্যাগতদের চা-চক্র আসলে হয়ে উঠেছিল বর্ণময় মিলন মেলা। আর সেখানেই অনুষ্ঠানের শেষপর্বে ধন্যবাদ দিতে উঠে দেব বলেন, ‘‘সম্প্রীতির ঐতিহাসিক মিলনক্ষেত্র দিঘায় জগন্নাথধামকে সাক্ষী রেখে মুখ্যমন্ত্রী গোটা দেশকে বার্তা দিয়েছেন। আসলে দিঘায় এখন পর্যটনের সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার মিলন ঘটেছে বঙ্গোপসাগরের সৈকতভূমিতে। বিভেদ উড়িয়ে বাংলা থেকে ফের সম্প্রীতির নিশান উড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলা চিরকাল দেশকে পথ দেখিয়েছে, এবারও মুখ্যমন্ত্রী সেই পরম্পরা বজায় রেখেছেন।’’ মন্দির উদ্বোধনে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথিদের এই চা-চক্রে বাংলা-মুম্বইয়ের শিল্পীরা যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন কবি-সাহিত্যিক, বণিকসভা ও ময়দানের ক্রীড়াকর্তারাও।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে পুরীর নিয়মে দিঘায় জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠায় শুরু হয় আচার-অনুষ্ঠান। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে পুজোপাঠ ও হোমযজ্ঞ। জগন্নাথদেবের মূল মন্দিরের সামনে হোমযজ্ঞ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল অস্থায়ী আটচালা ঘর। পুরীর মন্দির থেকে ৫৭ জন জগন্নাথদেবের সেবক এবং ইসকন থেকে ১৭ জন সাধু তাতে শামিল হয়েছেন। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘায় পৌঁছন। মঙ্গলবার বিশ্বশান্তির জন্য হয় মহাযজ্ঞ। মহাযজ্ঞে পূ্র্ণাহুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের হাতে আরতিও করেন। বলেন, মা-মাটি- মানুষের জন্য পুজো দিয়েছেন। মমতার কথায়, “মা-মাটি-মানুষ ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকব।” এবার মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই মন্দিরের দ্বারোদঘাটন ও জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে বুধবার। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বিধান অনুযায়ী তা করবেন পুরীর রাজেশ দৈতাপতি। মন্দির উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে জেলা, রাজ্য, প্রতিবেশী রাজ্যের বহু পুণ্যার্থী যাবেন সৈকত শহর দিঘায়।