• শর্ত মেনে মেট্রো চালাতে ছাড়পত্র শিয়ালদহ থেকে এসপ্লানেড পথে
    আনন্দবাজার | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত পথ খুঁটিয়ে পরিদর্শন করার দিন দুয়েকের মধ্যেই ওই পথে শর্তসাপেক্ষে যাত্রী পরিষেবা শুরু করার অনুমতি মিলল রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের তরফে। রবিবার মেট্রোপথের ওই অংশ পরিদর্শন করেন উত্তর সীমান্ত রেলের ভারপ্রাপ্ত রেলওয়ে সেফটি কমিশনার সুমিত সিঙ্ঘল। বস্তুত, শিয়ালদহ থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত পথে যাত্রী পরিষেবা শুরু হলে এই মেট্রোর হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পুরো পথই জুড়ে যাবে। সোমবার নিজের পর্যবেক্ষণ লিখিত আকারে জমা দেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনার। মঙ্গলবার সেই পর্যবেক্ষণ সরকারি ভাবে মেট্রো ভবনে এসে পৌঁছেছে। উপযুক্ত পরিচালন এবং রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা ছাড়াও কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা-সহ একাধিক শর্ত পূরণের কথা জানিয়ে ওই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি অনুযায়ী, সুড়ঙ্গপথে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে।

    তবে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোপথের সার্বিক ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে গিয়ে সেখানে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে একাধিক ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলেছেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনার। গত ২৭ এপ্রিল, অর্থাৎ পরিদর্শনের দিন অত্যন্ত অল্প কর্মী নিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা পরিচালনা সম্পর্কে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন বলে খবর। যদিও নিজের লিখিত রিপোর্টে সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেননি কমিশনার। তবে, মেট্রোকর্তারা পরিষেবার বিভিন্ন খুঁটিনাটি নিয়ে কতটা অবহিত, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

    পরিদর্শনের দিন এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ পথে স্পিড ট্রায়াল (গতি সংক্রান্ত পরীক্ষা) চলাকালীন চালককে আপৎকালীন ব্রেক কষতে বলেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনার। সেই সময়ে সুড়ঙ্গে ট্রেন থামতেই সল্টলেকের কন্ট্রোল রুমে রেডিয়ো তরঙ্গ নির্ভর সিগন্যালিং ব্যবস্থায় নির্দিষ্ট অ্যালার্ট শোনা যায়। কিন্তু অভিযোগ, কর্তব্যরত এবং মহড়ায় উপস্থিত মেট্রোর আধিকারিক বা কর্তারা কেউই তাতে সাড়া দিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করেননি। বিষয়টি নিয়ে নিজের পর্যবেক্ষণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেফটি কমিশনার।

    এ ছাড়া, বৌবাজারে সুড়ঙ্গ এলাকার চারটি জায়গায় বিপত্তির কারণে সুড়ঙ্গের ক্ষতি হয়েছিল। ওই সব জায়গায় ক্ষতি মেরামতের ক্ষেত্রে মেট্রো কর্তৃপক্ষ পরামর্শদাতা সংস্থার নির্দেশে উপযুক্ত পদক্ষেপ করেছেন বলে খবর। তবে, ওই ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিবিড় বিশ্লেষণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অংশে সুড়ঙ্গের অবস্থা প্রতিনিয়ত নজর রাখা, বাতাসের চাপ, অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করে তা নজরে রাখার ব্যবস্থা করার কথাও বলেছেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনার। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য নির্মিত পথের মুখে উপযুক্ত মানচিত্র, ক্যামেরা রাখার কথা বলা হয়েছে। দু’টি সুড়ঙ্গ যুক্ত করার পথে দরজায় আলো এবং টেলিফোনে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনার। মেট্রোকর্তাদের দাবি, যাবতীয় শর্ত পূরণ করে তবেই ওই পথে মেট্রো চালানো হবে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)