সন্ধ্যা হলেই টিভি চালিয়ে খেলা দেখতে হবে। আইপিএলের টানটান ম্যাচ একটাও ছাড়া যাবে না। সঙ্গে চলত আইপিএল অনলাইনে জুয়াও। লক্ষ লক্ষ টাকা সেই জুয়ায় উড়িয়ে দেওয়া হতো। নিত্যদিনই তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর বচসা লেগেই থাকত। স্ত্রী প্রতিবাদ করায় তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে নৃশংস ঘটনা নদিয়ার শান্তিপুরে। অভিযুক্ত স্বামী থানায় গিয়ে আত্মসমপর্ণ করেছে বলে খবর।
মঙ্গলবার রাতে নৃশংস খুনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় নদিয়ার শান্তিপুরে। অভিযুক্ত স্বামী বুদ্ধদেব সরকার শান্তিপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্ত্রী শ্রাবণী সরকারের সঙ্গে নিত্যদিনই ঝামেলা হতো বুদ্ধদেবের। দু’জনের ১৫ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
মেয়ের অভিযোগ, আইপিএল খেলা-সহ বিভিন্ন খেলায় আসক্ত ছিল বাবা। লক্ষ লক্ষ টাকা জুয়া খেলে হেরেছেন বুদ্ধদেব। সেই নিয়ে প্রতিবাদ করতেন মা। গতকাল রাত আটটা নাগাদ টিউশন সেরে বাড়ি ফিরে মেয়ে দেখে ঘরের মধ্যে পড়ে রয়েছে মায়ের দেহ। পাশেই একটি বঁটি ছিল। মায়ের ধড় থেকে মুণ্ড আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে যায় মেয়ে। তার চিৎকারে শুনেই ছুটে আসেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দারাই খবর দেন শান্তিপুর থানায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় হাসপাতালে। অন্যদিকে, স্ত্রীকে খুন করে ততক্ষণে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন অভিযুক্ত স্বামী বুদ্ধদেব সরকার। বুদ্ধদেব পানীয় জলের ব্যবসা করেন। পাশাপাশি একটি টোটো চালাতেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান নদিয়ার রানাঘাট পুলিশ জেলার এসডিপিও-সহ পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরা। পরিবারের অন্য সদস্য-সহ স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
বুদ্ধদেবের মেয়ে বলে, ‘আমি যখন মায়ের দেহ দেখি, তখন ঘরে বাবাকে দেখতে পাইনি। তখনই বুঝে গিয়েছিলাম, বাবাই কিছু একটা করেছে। দু’জনের মধ্যেই প্রায়শই অশান্তি হতো। আমি চাই আমার বাবার ফাঁসি হোক।’