সুপ্রকাশ চক্রবর্তী, হাওড়া
হাওড়ার বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ধস নামার কারণে সেখানে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ। বিকল্প জায়গা হিসেবে আরুপাড়াতে জঞ্জাল ফেলতে গিয়ে স্থানীয়দের বাধায় ফিরে আসতে হয়েছে পুরকর্মীদের। এই অবস্থায় কলকাতার ধাপায় হাওড়া পুরসভাকে জঞ্জাল ফেলার অনুমতি দিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেই মতো ধাপায় জঞ্জাল ফেলা শুরু হলেও সমস্যা কিছুতেই মিটছে না। হাওড়া থেকে ধাপার দূরত্ব বেশি হওয়ায় সেখানে জঞ্জাল ফেলতে অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে। এর ফলে হাওড়া পুর এলাকায় প্রতিদিন যে পরিমাণ জঞ্জাল তৈরি হয়, তার সবটা ধাপায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই কারণে হাওড়া শহরের বহু এলাকায় ভ্যাটের জঞ্জাল নিয়মিত পরিষ্কার হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। ঘনবসতি এলাকায় ভ্যাটে জঞ্জাল জমে থাকায় ছড়াচ্ছে দূষণ।
হাওড়া পুরসভার ভৈরব দত্ত লেন ও তিনকড়ি বসু লেনের উত্তর দিকে রেলের বেশ খানিকটা জমি রয়েছে। সেখানে প্রায়শই জল জমে থাকে। এখানে একটি পুরোনো ছোট ভ্যাট রয়েছে। সেখানে এতদিন মূলত এলাকার আবর্জনা জমা হতো। রোজ সকালে পুরসভার গাড়ি এসে সেখান থেকে জঞ্জাল তুলে নিয়ে যেত। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে ওই ভ্যাটের পাশেই আশপাশের এলাকার জঞ্জাল ফেলে দিয়ে যাচ্ছেন পুরকর্মীরা। তার ঠিক উল্টো দিকে রয়েছে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।
উন্মুক্ত জায়গায় জঞ্জাল জমে থাকায় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন আশপাশের বাসিন্দারা। তার জেরে একদিকে যেমন এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে, তেমনি সরু রাস্তা দিয়ে ময়লার গাড়ি যাতায়াত করায় সাধারণ মানুষের চলাফেরা করতে অসুবিধা হচ্ছে। অনেকের আশঙ্কা, বেলগাছিয়া ভাগাড়ের বিকল্প হিসেবে জঞ্জাল ফেলার জন্য এখানে 'মিনি ডাম্পিং গ্রাউন্ড' তৈরি করতে চাইছে হাওড়া পুরসভা। এর জেরে স্থানীয় একটি ক্লাবের প্রবেশদ্বার বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে। যেখানে জঞ্জাল ফেলা হচ্ছে, তার কিছুটা দূরেই রয়েছে সালকিয়া বিক্রম বিদ্যালয় ও নবগঠিত হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানকার ছাত্রছাত্রীরাও সমস্যায় পড়ছেন। নীচু এলাকা হওয়ায় ওই এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায়। ফলে এখানে যদি নিয়মিত শহরের জঞ্জাল ফেলা হয় তাহলে বর্ষার সময়ে মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত পাল বলেন, 'জায়গাটি হাওড়া পুরসভার ১০ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের একেবারে সংযোগস্থলে অবস্থিত। দুই ওয়ার্ডের টানাপড়েনে এমনিতেই এখানে নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হয় না। তার উপরে যদি আবার এখানে নতুন করে ভাগাড় তৈরি হয় তাহলে এলাকার পরিবেশ দূষিত হবে। শহরের আবর্জনা ফেলার জন্য পুর কর্তৃপক্ষ কী ভাবে এই জায়গাটি বাছলেন, তা ভেবে পাচ্ছি না।' হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী অবশ্য দাবি, 'ওই জায়গায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড বানানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। যে আবর্জনা পড়েছিল, সেটা সেটা তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।'