• লুপ্তপ্রায় পাখির শাবক, ছোট্ট হাটিটিকে আগলে রাখেন সঞ্জয়
    এই সময় | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • রনি চৌধুরী, ধূপগুড়ি

    লুপ্তপ্রায় প্রজাতির পাখি শাবকের প্রাণ বাঁচিয়ে সন্তান স্নেহে লালন করছেন কৃষকপুত্র সঞ্জয়। পাখিটি লুপ্তপ্রায় লাল-ওয়াটল্ড ল্যাপউইং প্রজাতির। বাংলায় হটটিটি বলেই পরিচিত। বানারহাট ব্লকের কেরানিপাড়া এলাকার এই পাখিটিকে ইতিমধ্যেই দেখে গিয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা।

    সঞ্জয়ের বাড়ির পাশেই রয়েছে মরাঘাট জঙ্গল। সেই জঙ্গল এবং চা বাগানের মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে নোনাই নদী। সেখানকার চা বাগানের নালাতে পাখির বাচ্চাটিকে পড়ে থাকতে দেখেন ওই যুবক। প্রথমে ভেবেছিলেন ময়ূর ছানা। পরে ভুল ভাঙে। পাখিটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। পরে জানা যায়, এটি কোনও সাধারণ পাখি নয়। এটি লুপ্তপ্রায় লাল-ওয়াটল্ড ল্যাপউইংবা হটটিটি।

    আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের পক্ষ থেকে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এই প্রজাতির পাখিটিকে। তথ্য বলছে, এই প্রজাতির পাখির দেখা মেলে পশ্চিম এশিয়ার ইরাক, ইরান, পারস্য উপসাগরে। এ ছাড়াও বেলুচিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, পাকিস্তানেও এদের অস্তিত্ব রয়েছে।

    সঞ্জয় বলেন, ‘সকালে বাগানে পরিচর্যার কাজ করার সময় পাখির কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। নজরে আসে নলার মধ্যে জলে ভিজে ঠান্ডায় কাঁপছে একটি পাখির বাচ্চা। বাড়ি নিয়ে আসি। পরে জানতে পারি এটি লুপ্তপ্রায় হটটিটি পাখির বাচ্চা। বিভিন্ন জায়গা থেকে পোকামাকড় এনে পাখিটিকে খাওয়াচ্ছি। অপেক্ষা করছি মা পাখিটি যদি ফিরে আসে, তাহলে তার কাছে ফিরিয়ে দেবো।’

    পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ডুয়ার্স নেচার অ্যান্ড স্নেক লাভার্স অর্গানাইজেশনের সদস্য শুভাশিস ঘোষ বলেন, ‘সঞ্জয় যে ভাবে লুপ্তপ্রায় প্রজাতির পাখির বাচ্চাটিকে বাঁচিয়ে শুশ্রূষা করে লালন পালন করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’ মোরাঘাট রেঞ্জের অফিসার চন্দন ভট্টাচার্য বলেন, ‘মানুষের মধ্যে প্রাণীর প্রতি যে ভালোবাসা রয়েছে তার জ্বলন্ত উদাহরণ সঞ্জয়। আমরা চাই প্রতিটি মানুষ বন্যপ্রাণী রক্ষায় বন দপ্তরের পাশে এসে এ ভাবেই দাঁড়াক।’

  • Link to this news (এই সময়)