রূপক মজুমদার, বর্ধমান
ব্লাড ক্যান্সারে (লিউকিমিয়া) আক্রান্ত ছাত্রী সঞ্জনা খাতুনকে অবশেষে পরীক্ষায় বসতে দিল স্কুল। মঙ্গলবার বর্ধমানের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহারানি অধিরানি বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে বাকি থাকা পরীক্ষাটি দিয়ে এল এই ছাত্রী। কেমো নিতে হাসপাতালে যাওয়ায় একাদশ শ্রেণির ফিজিক্যাল এডুকেশন পরীক্ষা দিতে পারেনি সঞ্জনা। পরে সেই পরীক্ষায় বসতে চেয়ে আবদেন জানালে তাকে সেই সুযোগ দেয়নি স্কুল।
ছাত্রীর পরিবার হোক বা এলাকার কাউন্সিলার কারও অনুরোধ রাখেননি প্রধান শিক্ষিকা অপরাজিতা সরকার। স্কুলের পক্ষ থেকে কাউন্সিলের নিয়মের কথা বলা হলেও কাউন্সিল স্পষ্ট জানিয়েছিল, মানবিকতার খাতিরে স্কুল ফের পরীক্ষা নিতেই পারে। এতে কাউন্সিলের কোনও আপত্তি নেই। এ নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় 'এই সময়'-এ। তার জেরেই তৎপরতার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে স্কুল পদক্ষেপ করল বলে মনে করেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস। একই কথা শোনা গেল সঞ্জনার মামা শেখ আনসারের মুখেও।
মঙ্গলবার খোকন দাস বলেন, 'সোমবার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার মেয়েটির পড়াশোনার ব্যবস্থা করবই। কাউন্সিলের আধিকারিকদের সঙ্গে স্কুলে বসেই ফোনে কথা বলেছি। তবে বিষয়টি নিয়ে যে ভূমিকা 'এই সময়' পালন করেছে, তা অনস্বীকার্য।' শেখ আনসারের বক্তব্য, 'ধারাবাহিক ভাবে 'এই সময়' পত্রিকায় এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হওয়ায় বিধায়ক, কাউন্সিলার সকলেই স্কুলে এসে কথা বলেন। অবশেষে স্কুল বাধ্য হলো ভাগ্নির পরীক্ষা নিতে।'
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের যুগ্ম কনভেনার অতনু নায়েক বলেন, 'সংসদের সভাপতির সঙ্গে কথা বলার পরেই মেয়েটির পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়েছে ওই স্কুল। সে পরীক্ষায় পাশও করেছে। তার নম্বর পোর্টালে আপলোড করে দিয়েছে স্কুল। মেয়েটি সুস্থ থাকুক, ভালো করে পড়াশোনা করুক, এটাই আমরা চাই।' এলাকার কাউন্সিলার শাহবুদ্দিন খান বলেন, 'শেষ পর্যন্ত ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিতে পেরেছে, এটাই আমাদের প্রাপ্তি।'