• বৈশাখী রথে সওয়ার বাবা জটিলেশ্বর, হুগলির এই গ্রামে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন পালিত হয় রথযাত্রা...
    আজকাল | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি:‌ আষাঢ়ে নয়। বৈশাখী রথ। রথে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা নয়। সওয়ার হন বাবা জটিলেশ্বর। প্রায় তিনশো বছরের প্রাচীন এই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় হুগলির চুঁচুড়া উত্তর সিমলা গ্রামে। বুধবার রথে চেপে জটিলেশ্বর বাবা রওনা দিয়ে পৌঁছলেন শিরীষতলা। আবার ফিরে এলেন মন্দিরে। সাধারণত জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে আষাঢ় মাসে। সেই রথে করে প্রভু জগন্নাথ বলভদ্র সুভদ্রা মাসির বাড়ি যান। পুরী, শ্রীরামপুরের মাহেশ সহ দেশ ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একই দিনে সেই রথযাত্রা উৎসব হয়। ব্যতিক্রম উত্তর সিমলা গ্রাম। এখানে সেটা হয় না। এই গ্রামে রথযাত্রা অনুষ্ঠান হয় অক্ষয় তৃতীয়ার দিন। বাবা জটিলেশ্বরের রথের রশিতে টান পড়ে।

     কথিত আছে প্রায় ৩০০ বছর আগে সরস্বতী নদীতে একটি শিলা কুড়িয়ে পান এক মহিলা। সেই শিলাখণ্ড নিয়ে তিনি বাড়ির দিকে পা বাড়ান। পথে একটু জিরিয়ে নিতে গাছের ছায়ায় বসে ঘুমিয়ে পড়েন। তার পরেই তিনি স্বপ্নাদেশ পান ওই জায়গাতেই সেই শিলাকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তার পরই সরস্বতী নদীর পূর্ব প্রান্তে উত্তর সিমলা গ্রামে প্রতিষ্ঠা হয় জটিলেশ্বর বাবার মন্দির। স্থানীয়দের মতে এই ঠাকুরের কৃপায় অনেক জটিল রোগ সেরে যেত। 

    সে সময় মহামারি হত। অনেকে মন্দিরে আসতে পারতেন না। তাই অক্ষয় তৃতীয়ার দিন বাবা জটিলেশ্বর রথে চেপে বাইরে বেরোতেন। যারা তাঁর দর্শন পেত, তাদের অসুখ সেরে যেত। আজও মানুষের সেই বিশ্বাস অটুট রয়েছে। প্রসঙ্গত, আইন উৎসবকে কেন্দ্র করে গ্রামে রথের মেলা বসে। চলে চারদিন ধরে। সকালে রথের টান হয় শিরীষতলা পর্যন্ত। বিকালে বাবা আবার মন্দিরে ফিরে আসেন। এভাবেই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে বাবা জটিলেশ্বরের রথ। 

    এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা অর্মিতেন্দু ঘোষ বলেছেন, আগে মন্দির ছোটো ছিল। এখন বড় হয়েছে। চূড়া হয়েছে। মানুষ বিশ্বাস থেকে ভিড় করেন রথের মেলায়। সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা বলেন, বাবা জটিলেশ্বরকে নিয়ে মানুষের একটা আবেগ, বিশ্বাস আছে।

    স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় মন্দিরের সামনে হাইমাস্ট আলো,পানীয় জল, শৌচালয় ইত্যাদি তৈরি হয়েছে।

    ছবি:‌ পার্থ রাহা

     
  • Link to this news (আজকাল)