• অক্ষয় তৃতীয়ার ভোরে মাহেশের জগন্নাথ দেবের চন্দনযাত্রার সূচনা, ভক্তদের ঢল
    প্রতিদিন | ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • সুমন করাতি, হুগলি: আজ বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার দিন শ্রীরামপুর মাহেশ জগন্নাথ দেবের মন্দিরে শুরু হল চন্দনযাত্রা অনুষ্ঠান। ৬২৯ বছরের প্রাচীন ঐতিহাসিক মাহেশের এই মন্দিরে মানুষের ঢল দেখতে পাওয়া যায়। এদিন ভোর সাড়ে চারটেয় মঙ্গল আরতির মাধ্যমে এই চন্দনযাত্রার সূচনা হয়। এই চন্দনযাত্রা আগামী ৪২ দিন ধরে চলবে বলে মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে।

    প্রতি বছরই শ্রীরামপুরের মাহেশের মন্দিরে চন্দনযাত্রা অনুষ্ঠানে প্রচুর মানুষের ঢল নামে। সেজন্য প্রশাসনের তরফে আঁটসাঁট নিরাপত্তার ব্যবস্থাও রয়েছে। এদিন আরতির পর সকাল ছটা থেকে শুরু হয় জগন্নাথ দেবের জন্য চন্দন বাটা অনুষ্ঠান। মহিলারা সেই চন্দন বাটার কাজে হাত লাগান। বেলা ১১টার পর চন্দনযাত্রার সন্ধিক্ষণে জগন্নাথ দেব, বলরাম ও সুভদ্রাকে  চন্দনের প্রলেপ দেওয়া হয়। জগন্নাথ দেবের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী, ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী-সহ মন্দিরের পুরোহিতরা জগন্নাথের মাথায় চন্দনের প্রলেপ দেন।

    জগন্নাথ দেব ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী বলেন, “বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়াতে বা অক্ষয় তৃতীয়াতে এই চন্দনযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। কথিত আছে রাজা ইন্দ্রঘনুকে প্রভু জগন্নাথদেব স্বপ্নাদেশ দেন, এই প্রবল গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে শান্তি দিতে তাঁর মাথায় এবং সর্বাঙ্গে যেন চন্দনের প্রলেপ দেওয়া হয়। সেই স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পরেই মাহেশের মন্দিরের জগন্নাথ দেবকে চন্দন মাখানো শুরু হয়।” সেই সময় থেকেই যুগ যুগ ধরে এই প্রথা চলে আসছে।

    পুরীর মন্দিরে মদনমোহনকে নরেন্দ্র সরোবরের চন্দন জলাশয় নিয়ে গিয়ে জলকেলি করানো হয়। হুগলির মাহেশের মন্দিরে জগন্নাথ দেবনদে স্নানপর্ব অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা মাস অনুযায়ী সারা বছরে চারটি শুভ দিন আছে। পয়লা বৈশাখ, বিজয়া দশমী, কার্তিক মাসের প্রথম দিন, এবং অক্ষয় তৃতীয়া এই চারটি দিনকে শুভ বলে ধরা হয়। এগুলির মধ্যে সব থেকে শুভ দিন অক্ষয় তৃতীয়া। সেই কারণেই এই দিনকেই প্রভুর চন্দন যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। চন্দনযাত্রার পর ভোগ আরতী হবে। তারপরই ভক্তরা প্রসাদ গ্রহণ করতে পারবেন বলে খবর।

    আগামী ৪২ দিন প্রতিদিন জগন্নাথ দেবকে চন্দনের প্রলেপ দেওয়া হবে। দেহ শীতল রাখার জন্যই এই চন্দনলেপন পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ১১ জুন স্নানযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। সেদিন কয়েক মন দুধ ও ঘড়া ঘড়া গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানো হবে। সেই স্নানযাত্রার দিনেও প্রচুর ভক্ত সমাগম হবে বলে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)