অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কি ছিল না? ফায়ার অ্যালার্ম কি বাজেনি? প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে একগুচ্ছ। এর মধ্যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন হোটেলেরই পাশের বাড়ির বাসিন্দারা। চোখের সামনে পাকানো ধোঁয়ার মধ্যে থেকেই লোকেদের আর্তনাদ শুনেছেন। চাক্ষুস করেছেন সেই বিভিষীকাময় ঘটনা। কী জানালেন তাঁরা?
মেছুয়া ফলপট্টির ‘ঋতুরাজ’ নামে ওই হোটেলের সামনের রাস্তার উল্টোদিকেই রয়েছে চারতলা আবাসন। সেই আবাসনেরই এক বাসিন্দা পবন বলেন, ‘আমি ঘরে ঘুমোচ্ছিলাম। হঠাৎ খুব চিৎকার, চেঁচামিচির আওয়াজ শুনে বাইরের ব্যালকনিতে আসি। ওই হোটেলে তখন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। জানলা দিয়ে অনেককে ঝাঁপ মারতে দেখলাম।’ দীর্ঘদিন ধরেই বড়বাজার এলাকায় ঘিঞ্জি বসবাসের জন্যেই এই অবস্থা বলে দাবি তাঁরা।
ওই আবাসনেই একটি ফ্ল্যাটে থাকেন অবিনাশ গুপ্তা। আগুনের লেলিহান শিক্ষা ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল পাশের ফ্যাটের বাসিন্দাদেরও। ঘরের ভিতরে থাকা অসহায় হয়ে উঠেছিল ধোঁয়ার কারণে। অবিনাশ বলেন, ‘আমাদের ফ্যাটের লোকজনও বাইরে চলে গিয়েছিল ধোঁয়ার জন্য। আমাদের মধ্যেও ভয় ধরেছিল।’
কাছেই শ্রমিকের কাজ করেন রাকেশ যাদব। তিনি বলেন, ‘আমি যখন ঘটনাস্থলে এলাম, দেখলাম প্রচুর লোক ছোটাছুটি করছে। উপরের দিকে চোখ যেতেই দেখি অনেকেই জানলা দিয়ে নামার চেষ্টা করছেন। জানলায় জোরে জোরে ধাক্কা মারছেন। বাচ্চা-বুড়ো অনেকেই মেন গেটের কাছে এসেও আটকে গিয়েছিলেন। ধোঁয়াতেই দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন অনেকে।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ ফলপট্টি মেছুয়া সংলগ্ন জোড়াসাঁকোর ঋতুরাজ হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। মোট ৯৯ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়। এই অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ১৩ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে বা ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে এবং একজন আতঙ্কে লাফিয়ে পড়ার কারণে প্রাণ হারান। আহত ১৩ জনকে চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হোটেল সূত্রে খবর, হোটেলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও অগ্নিকাণ্ডের সময় সেটি কাজ করেনি বলে খবর।