ঘাড় গুঁজে পড়াশোনা নয়। মোবাইলে আসক্তিও নেই। রিজেন্ট পার্কের একটি বেসরকারি স্কুলের ছাত্রী সৃজনী আইএসসি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। প্রাপ্ত নম্বর ৪০০-এর মধ্যে ৪০০।
এরকম স্কোর কি আশা ছিল? সৃজনী জানাল, একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনায় ‘টাইট রুটিন’ ছিল না। তবে, দ্বাদশ শ্রেণিতে সময় একটু বেশি দিতে হয়েছে। দিনে নয়-দশ ঘণ্টা প্রস্তুতি (সৃজনীর কথায় তাও প্রতিদিন নয়) নিতে হয়েছে। ফাঁকা সময়টা গান শোনা, পরিবারের সঙ্গে বসে সামান্য টিভি দেখা। ব্যস! ওইটুকুই। সৃজনীর ভালো লাগা বলতে নাচ। নাচের প্রতি বিশেষ ঝোঁক রয়েছে দীর্ঘদিন থেকেই।
ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ে এগোনোর ইচ্ছা নেই সৃজনীর। এখানে ব্যতিক্রমী সে। বাবা ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট কলকাতার গণিতের অধ্যাপক, মা গুরুদাস কলেজের ইতিহাস শিক্ষিকা। দশম শ্রেণি পর্যন্ত গৃহশিক্ষকের প্রয়োজন হয়নি। অঙ্ক ও ফিজিক্স পড়িয়ে দিতেন বাবাই। ইংলিশ মা পড়াতেন। স্কুলের শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের অবদান অনেকটাই। শুধু রসায়নের জন্য একজন গৃহশিক্ষক ছিলেন। সৃজনীর কথায়, ‘সবাই ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আইআইটির পিছনে ছুটছে। আমি জয়েন্ট দেব, তবে আমার লক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ারিং নয়।’
সৃজনীর মায়ের কথায়, ‘ওকে ছোট থেকেই দেখেছি, কিছু জিনিস নিয়ে গবেষণা করতে পছন্দ করে। ওই দিকেই ওর ইচ্ছা রয়েছে। সেই কারণেই ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের থেকে গবেষণার দিকেই ও যেতে ইচ্ছুক।’ উচ্চশিক্ষার পর পদার্থবিদ্যা বা গণিত নিয়ে গবেষণা করারই ইচ্ছা রয়েছে সৃজনীর। লক্ষ্য ভালো বিজ্ঞানী হওয়ার। এ বার আরও কঠিন পথচলা শুরু।
তবে সৃজনী পদবী ব্যবহার করে না কেন? মেধাবী ছাত্রীর স্পষ্ট উত্তর, ‘আমি পিতৃতান্ত্রিক কাঠামোতে বিশ্বাসী নয়। কোনও জাতি বা ধর্মের ঊর্ধ্বে গিয়ে এই পরিচয়। মা-বাবাও এটা চেয়েছিলেন। তাঁদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে এখনও আমি একমত।’