নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: সর্বভারতীয় আইসিএসই দশমের পরীক্ষায় জোড়া সাফল্য পেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। জেলার দুই ছাত্রী আদৃতা মাহাত ও সৃজিতা মণ্ডল সর্বভারতীয় এই পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করল। তারা মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনের ছাত্রী। তাঁদের দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৯। মেধাবী দুই ছাত্রী ৯৯.৮শতাংশ নম্বর পাওয়ায় খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকরা।
বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনের ছাত্র প্রবাহনীল দাস ৯৯.২শতাংশ নম্বর পেয়ে সর্বভারতীয় এই পরীক্ষায় পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। এবছর মেদিনীপুর শহরের এই স্কুলের ফলাফল নজর কেড়েছে। এই স্কুলে ৯৯শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে চারজন। ৯৭-৯৮.৯ শতাংশের মধ্যে নম্বর পেয়েছে ২২জন পড়ুয়া। এছাড়া ৯৫-৯৬.৯ শতাংশের মধ্যে নম্বর পেয়েছে ১৭ জন। এদিন স্কুলের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত সকলে। স্কুলের প্রিন্সিপাল ছন্দা মজুমদার বলেন, এটা আমাদের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। একইসঙ্গে দুই ছাত্রী সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে। আমাদের শিক্ষকরাও প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। সামগ্রিকভাবে স্কুলের সমস্ত ছাত্রছাত্রীই ভালো ফল করেছে। এটা আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আদৃতা ছোট থেকেই মেধাবী। তাঁরা বাবা প্রণবেশ মাহাত শিক্ষক। মা অসীমা মাহাত গৃহবধূ। বেশিরভাগ বিষয়ে আদৃতা ১০০শতাংশ নম্বর পেয়েছে। পড়াশোনার ফাঁকে অবসর সময়ে ছবি আঁকা, সিনেমা দেখতে ভালোবাসে সে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে গবেষণার কাজ করতে চায় আদৃতা। এদিন স্কুলে দাঁড়িয়ে আদৃতা বলে, সকলের সহযোগিতা ছাড়া এই সাফল্য আসত না। পরিবারের সবাই ছাড়াও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সহযোগিতা করেছেন। আদৃতার বাবা প্রণবেশ মাহাত বলেন, ও পরীক্ষায় ভালো ফল করবে বলে আশা করেছিলাম। মেয়ের ফলাফলে আমরা খুশি। আদৃতার মা অসীমা মাহাত বলেন, মেয়ে নিজের মতো পড়াশোনা করত। ওকে কখনও চাপ দেওয়া হয়নি।
মেদিনীপুর শহরের শরৎপল্লির বাসিন্দা সৃজিতা মণ্ডলও ৪৯৯ নম্বর পেয়েছে। পদার্থবিজ্ঞান তার প্রিয় বিষয়। ভবিষ্যতে গবেষণা করতে চায়। বাবা রাজীব মণ্ডল ও মা রানু ভুঁইয়া মণ্ডল দু’জনেই শিক্ষক। সৃজিতার পরিবারের সদস্যরা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ওর ভালো রেজাল্ট হবে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু এত ভালো হবে ভাবা যায়নি।
স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, এবছর আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। সকলেই খুঁটিয়ে বই পড়েছে। আইএসসি বোর্ডের পরীক্ষা দেওয়া আমাদের পড়ুয়াদের ভালো ফলাফল হয়েছে। স্কুলের মধ্যে ঋদ্ধি চক্রবর্তী, অন্বেষা মণ্ডল ও খুশি সাকারিয়া ভালো ফল করেছে। মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা চন্দন দাস বলেন, বাংলা হোক বা ইংরেজি মাধ্যম। যে কোনও বোর্ডের পরীক্ষায় মেদিনীপুরের ছাত্রছাত্রীদের ফলাফল ভালো হয়। এত নম্বর পাওয়া খুব সহজ নয়।-নিজস্ব চিত্র