• সম্পর্কে টানাপোড়েনের জেরে বাড়িতেই যুবককে কুপিয়ে খুন, থানায় আত্মসমর্পণ দম্পতির
    বর্তমান | ০১ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: সালানপুরের পর বারাবনি। ফের শিল্পাঞ্চলে নৃশংস খুন। ঘটনাস্থল বারাবানি থানার কাপিষ্টা গ্রাম। মঙ্গলবার রাতে এই গ্রামে নিজের বাড়িতে এক যুবককে নৃশংস খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ করে দম্পতি। ঘটনাটিকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিস ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।  

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম বাপি রুইদাস (২৮)। মন্টু দাসের বাড়ি থেকে পুলিস বাপির ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে। বাপিকে খুন করে মন্টু দাস ও তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী দাস থানায় আত্মসমর্পণ করে। পুলিসকে খুনের ঘটনা জানায়। পুলিস তাদের বাড়িতে যায়। সম্পর্কে টানাপোড়েনের জেরেই খুন বলেই  প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে। ডিসি সন্দীপ কাররা বলেন, ‘খুনের ঘটনায় আমরা দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।’  

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্টু দাস স্বর্ণকার। অলঙ্কার নির্মাণ করেন। স্ত্রী লক্ষ্মী সম্পূর্ণ গৃহবধূ। বয়স আটত্রিশ। দম্পতির এক মেয়ে। তাঁর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দু’টি ছেলেও বড়। অন্যদিকে, ওই গ্রামেই বাড়ি বাপি রুইদাসের। তিনি দিনমজুর। লক্ষ্মীর সঙ্গে বাপির বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক ছিল বলে বাসিন্দাদের একাংশের দাবি। তবে পুলিসকে লক্ষ্মী জানিয়েছে, তিন বছর ধরে বাপি তাঁকে উত্যক্ত করত। যদিও বিষয়টি তিনি কাউকে কেন জানালেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, এদিন মন্টু দাস বাড়িতে থাকার সময়ই তাঁর বাড়িতে হাজির হয় বাপি। স্বামীর সামনেই লক্ষ্মীকে কুপ্রস্তাব দেন তিনি। তাতেই দু’পক্ষের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়। তখনই বাড়িতে থাকা কুড়ুল নিয়ে এসে মন্টু ও লক্ষ্মী মিলে বাপির মাথায় আঘাত করে বলে অভিযোগ। রক্তে ভেসে যায় ঘরের মেঝে। বেগতিক বুঝে দম্পত্তি বারাবনি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। 

    পুলিস দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়না তদন্তে জন্য‌ পাঠায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামগ্রাম পঞ্চায়েতের কাপিষ্টা গ্রামে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুভাষ মাজি বলেন, বাপি কোনও অপরাধ করে থাকলে ওই দম্পতি পঞ্চায়েতকে জানাতে পারত। এভাবে নিজেরা খুন করবে, তা এলাকার মানুষ মেনে নিতে পারছে না। সোমবার রাতেই একইভাবে নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছে সালানপুর থানার বাঁশকেটিয়া এলাকায়। সেখানে স্ত্রীর কাছ থেকে ভাজা মাছ খেয়ে নেওয়ায় বন্ধুকে পিটিয়ে খুন করেছিল গৃহকর্তা। এক্ষেত্রেও তার অভিযোগ ছিল, স্ত্রীর সঙ্গে বন্ধু খারাপ আচরণ করত। এভাবে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে তৃতীয় পক্ষের চলে আসাকে ঘিরে শিল্পাঞ্চলে অপরাধ প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে।  ধৃত অভিযুক্ত।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)