• আইসিএসই-আইএসসিতে ফুল মার্কস পেয়ে দেশের সেরা, দশম-দ্বাদশে প্রথম বাংলার দেবত্রী ও সৃজনী
    বর্তমান | ০১ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দিল্লি বোর্ডের পরীক্ষায় রাজ্যের জয়জয়কার। আইসিএসই (দশম) এবং আইএসসি (দ্বাদশ) পরীক্ষায় ফুল মার্কস পেয়ে দেশে প্রথম হয়েছেন রাজ্যেরই দুই ছাত্রী। নিউটাউনের ডিপিএস মেগাসিটির ছাত্রী দেবত্রী মজুমদার আইসিএসইতে ৫০০-য় ৫০০ পেয়েছেন। রাজ্যে তো বটেই, গোটা দেশেই তিনি অন্যতম প্রথম। আইএসসিতে একই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্কের ফিউচার ফাউন্ডেশনের ছাত্রী সৃজনী (পদবি ব্যবহার করেন না)। তিনি ৪০০-য় ৪০০ পেয়েছেন। সিআইএসসিই সরকারিভাবে কোনও মেধা তালিকা প্রকাশ না করায় রাজ্যে আর কেউ এই কৃতিত্বের অধিকারী কি না, জানা যায়নি।

    দেবত্রী ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। লক্ষ্য আইআইটি। সেই মতো গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছে সে। জয়েন্টের প্রস্তুতিও চলছে। তবে উল্লেখযোগ্য হল, সে ইংরেজির পাশাপাশি আবশ্যিক বিষয় হিসেবে বাংলাও রেখেছে। তার মা-বাবা দু’জনেই মেধাবী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে এখন তাঁরা নামী সংস্থায় কর্মরত। দেবত্রীর ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নও তার মা-বাবাকে দেখেই। তাঁরাই দেবত্রীর আইডল।

    বাড়িতে পড়াশোনার আবহে বেড়ে উঠেছেন সৃজনীও। মা গুরুদাস কলেজে ইতিহাসের শিক্ষিকা। বাবা ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে (আইএসআই) গণিতের শিক্ষক। জেইই (মেইন)-এ ৯৯.৫ এনটিএ স্কোর করলেও ইঞ্জিনিয়ার হতে চান না তিনি। বাবার মতোই গণিত অথবা পদার্থবিদ্যার মতো মৌলিক ক্ষেত্রে গবেষণা করতে চান। তিনি জানিয়েছেন, বাকি বিষয়গুলি নিয়ে নিশ্চিত থাকলেও ইংরেজিতে ১০০-য় ১০০ পাওয়া নিয়ে সন্দিহান ছিলেন তিনি। ফল দেখার পরও যেন বিশ্বাস হয়নি। মাকে রেজাল্টের পোর্টাল ‘রিফ্রেশ’ করতে বলেন। তারপরই নিশ্চিত হন যে সব বিষয়েই মিলেছে ফুল মার্কস। 

    কলকাতা ও শহরতলিতে দারুণ ফল করেছেন বহু ছাত্রছাত্রী। পিছিয়ে নেই জেলাগুলিও। আইএসসি’তে ৪০০-এ ৩৯৯ পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন কোচবিহারের সেন্ট মেরিজ হাইস্কুলের ছাত্রী অনুষ্কা রায়। তিনি উত্তরবঙ্গে প্রথম। দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এসেছে জোড়া সাফল্য। মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনের দুই ছাত্রী আইসিএসইতে ৫০০-এ ৪৯৯ পেয়ে রাজ্য ও দেশের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছে।

    এ বছর গোটা দেশে এবং রাজ্যেও ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরাই বেশি সফল। রাজ্যে ৯৯.৪ শতাংশ ছাত্রী আইসিএসইতে পাশ করেছে। ছাত্রদের পাশের হার ৯৮.৫৩ শতাংশ। রাজ্যে সার্বিকভাবে আইসিএসই-র পাশের হার ৯৮.৭৬ শতাংশ। পরীক্ষায় বসেছিল ৪৩ হাজার ৭৮৪ ছাত্রছাত্রী। একই ছবি আইএসসিতেও। ৯৯.৩৮ শতাংশ ছাত্রী পাশ করেছেন। আর ছাত্রদের পাশের হার ৯৮.২০ শতাংশ। সার্বিকভাবে পাশ করেছেন ৯৮.৭৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী। পরীক্ষা দিয়েছিলেন ২৭ হাজার ৮০৪ জন।

    দেশ এবং বিদেশের কিছু পরীক্ষাকেন্দ্র মিলিয়ে আইসিএসইতে বসেছিল ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৫৫৭ জন। পাশের সার্বিক হার ৯৯.০৯ শতাংশ। ছাত্রীদের পাশের হার ৯৯.৩৭ শতাংশ। ৯৮.৮৪ শতাংশ ছাত্র পাশ করেছে। আইএসসিতে ছিলেন ৯৯ হাজার ৫৫১ ছাত্রছাত্রী। সেখানে ছাত্রদের পাশের হার ৯৮.৬৪ শতাংশ। পাশের হারে তাঁদের টেক্কা দিয়েছেন ছাত্রীরা। ৯৯.৪৫ শতাংশ ছাত্রী আইএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এই পরীক্ষায় সার্বিক পাশের হার ৯৯.০২ শতাংশ।
  • Link to this news (বর্তমান)