কাউন্সিল ফর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজ়ামিনেশন (সিআইএসসিই)–র দশম (আইসিএসই) এবং দ্বাদশ শ্রেণির (আইএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে এ বছর নজর কেড়েছে পশ্চিমবঙ্গ। দুটি পরীক্ষাতেই রাজ্যে ছাত্রদের থেকে ছাত্রীদের পাশের হার বেশি। এ বছর আইসিএসই পরীক্ষায় রাজ্যের পড়ুয়াদের পাশের হার ছিল ৯৮.৭৬ শতাংশ। আইএসসি পরীক্ষায় রাজ্যের পড়ুয়াদের পাশের হার ৯৮.৭৫ শতাংশ। দেশ এবং বিদেশের পরীক্ষার্থী মিলিয়ে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশের হার ৯৯.০৯ শতাংশ। দ্বাদশের পরীক্ষায় পাশের হার ৯৯.০২ শতাংশ। উত্তীর্ণদের সকলকে শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি যারা ভালো ফলাফল করতে পারেননি তাঁদের ভেঙে না পড়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
৪০০ মার্কসের মধ্যে ৪০০ পেয়ে আইএসসি পরীক্ষায় সম্ভাব্য প্রথম হয়েছেন কলকাতার মেয়ে সৃজনী। তিনি রিজেন্ট পার্কের ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলের পড়ুয়া। দ্বাদশে পদার্থবিদ্যা, গণিত এবং রসায়ন ও ইংরাজি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই এই ফলাফলে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা উচ্ছ্বসিত।
রাজ্যের মোট ৪৩ হাজার ২৪০ জন পড়ুয়া আইসিএসই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ২৩ হাজার ৭০২ জন অর্থাৎ ৯৮.৫৩ শতাংশ, ছাত্রীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৫২৮ জন অর্থাৎ ৯৯.০৪ শতাংশ। অর্থাৎ ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীদের পাশের হার বেশি। এ রাজ্যের মোট ৪৩৫টি স্কুলে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।
রাজ্যের মোট ২৭ হাজার ৪৫৬ জন পড়ুয়া আইএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ১৪ হাজার ৭১১ জন অর্থাৎ ৯৮.২০ শতাংশ। ছাত্রীর সংখ্যা ১২ হাজার ৭৪৫ জন অর্থাৎ ৯৯.৩৮ শতাংশ। এক্ষেত্রেও ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীদের পাশের হার বেশি। রাজ্যের মোট ৩৩৩ টি স্কুল এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।
আইসিএসই-তে দেশ এবং বিদেশের অঞ্চলভিত্তিক পাশের হারে প্রথম দেশের পশ্চিমাংশের রাজ্যগুলি। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে দক্ষিণ ভারত। অন্যদিকে আইএসসি-তে দেশ এবং বিদেশের অঞ্চলভিত্তিক পাশের হারে প্রথম দক্ষিণ ভারত। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দেশের পশ্চিমাংশের রাজ্যগুলি। দেশ ও বিদেশের পরীক্ষার্থীদের মিলিয়ে দশম শ্রেণির (আইসিএসই) পরীক্ষায় মোট ২ লক্ষ ৫০ হাজার ২৪৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৫৫৭ জন। পাশ করতে পারেননি ২,৩০৮ জন। তাঁদের মধ্যে ১,৫৬১ জন ছাত্র এবং ৭৪৭ জন ছাত্রী। দ্বাদশের (আইএসসি) পরীক্ষায় ৯৮ হাজার ৫৭৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৯৯ হাজার ৫৫১ জন। পাশ করতে পারেননি ৯২৭ জন। তাঁদের মধ্যে ৭১৩ জন ছাত্র ও ২৬০ জন ছাত্রী।
যে সকল পড়ুয়ারা ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট নন তাঁরা সিআইএসসিই–র পোর্টালে খাতা রিচেকের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ৪ মে পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন পড়ুয়ারা। এছাড়াও নম্বর বৃদ্ধি করতে আগ্রহী পড়ুয়াদের জন্য কাউন্সিল ইমপ্রুভমেন্ট টেস্টের ব্যবস্থা করেছে। তবে সর্বাধিক দু’টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারবেন পড়ুয়ারা। চলতি বছরের জুলাই মাসে সেই পরীক্ষা নেওয়া হবে। কাউন্সিলের তরফে জানানো হয়েছে, তবে কোনও পরীক্ষার্থী মূল পরীক্ষায় উপস্থিত না থাকলে তিনি ইমপ্রুভমেন্ট টেস্টে বসতে পারবেন না।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘ এ বছর আইসিএসই ও আইএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সকল পড়ুয়াদের শুভেচ্ছা জানাই। তাঁরা সকলেই ভবিষ্যতে অনেক সাফল্য পাবেন বলে আমি আশাবাদী। পড়ুয়া সহ তাঁদের অভিভাবক ও শিক্ষকদেরও শুভেচ্ছা জানাই। পাশাপাশি যাঁরা এই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারেননি তাঁরা যেন ভেঙে না পড়েন। আমি নিশ্চিত, আগামী দিনে তাঁরা সাফল্য অর্জন করবেন। ‘