• যে দিন অগ্নিকাণ্ড সে দিনই লাইসেন্স রিনিউয়ের চেষ্ট! পুরসভার নজরে হোটেলের নথি
    এই সময় | ০১ মে ২০২৫
  • যে হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, কলকাতা পুরসভার নথিতে সেই ঋতুরাজ হোটেলের কোনও অস্তিত্বই নেই। সরকারি কাগজে লেখা রয়েছে, ওই জায়গাটির মালিকানা রয়েছে বলরাম প্রপার্টিজ প্রাইভেট লিমিটেডের নামে। প্রশ্ন উঠেছে, এত অনিয়ম করেও কেন ছাড় পেয়ে যাচ্ছিল ওই হোটেলটি।

    প্রাথমিক তদন্তে পুরকর্তারা জানতে পেরেছেন, ওই ঠিকানায় ঋতুরাজ নামে কোনও হোটেলের অস্তিত্ব নেই পুরসভার কাছে। বরং ট্রেড লাইসেন্সের খাতায় মেছুয়ার ওই ঠিকানায় রয়েছে বলরাম প্রপার্টিজের নাম। পুরসভার একটি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে আগুন লাগার আগে দুপুরে ওই সংস্থার ট্রেড লাইসেন্স রিনিউয়ালের বকেয়া বিল মিটিয়ে দেওয়া হয়। এই টাকা জমার রহস্য এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের আধিকারিকদের।

    মেছুয়ার অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই পুরসভা একটি পৃথক তদন্ত দল গঠন করেছে। সেই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন পুর কমিশনার ধবল জৈন। ছ’জনের কমিটিতে একাধিক পুর আধিকারিক রয়েছেন। তাঁদের নিয়ে বুধবার দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে সাতদিনের মধ্যে মেছুয়ার অগ্নিকাণ্ড নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র।

    মেছুয়ার ঋতুরাজ হোটেল নিয়ে স্থানীয়রা বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছেন বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা। পুরসভা সূত্রের খবর, ১৯৯৪ সাল থেকে মেছুয়ার ওই ঠিকানায় নির্মাণ কার্য শুরু হয়। প্ল্যান অনুমোদন করা থেকে শুরু করে বিল্ডিংয়ের ভিতরে পরতে পরতে নিয়ম ভাঙা হয়েছে বলে পুরসভার কাছেও খবর এসেছে।

    বুধবার ফরেন্সিক তদন্তের কারণে বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরা মেছুয়ার পুড়ে যাওয়া হোটেলে যাননি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, ফরেন্সিক তদন্ত শেষ হলে তাঁরা মেছুয়ার ঋতুরাজ হোটেল পরিদর্শনে যাবেন।

    তবে ওই হোটেলের অনিয়ম নিয়ে পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স, বিল্ডিং, রাজস্ব বিভাগ, জল এবং বিদ্যুৎ বিভাগে জোর শোরগোল পড়েছে। মেছুয়ার স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘ দিন ধরে ওই হোটেলে বেআইনি নির্মাণ হয়েছে সকলের চোখের সামনে। অথচ পুরসভার তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকী স্থানীয় কাউন্সিলারকেও কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

    এই অভিযোগের উত্তরে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রীতা চৌধুরী বলেন,‘কাউন্সিলারের কাছে কেউ বিল্ডিং প্ল্যান জমা দিয়ে বাড়ি বানান না। তা জমা পড়ে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগে। তাই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কাউন্সিলারের কিছু করার থাকে না।’

  • Link to this news (এই সময়)