এই সময়, কালনা: রাজ্য ও জাতীয় স্তরের একাধিক প্রতিযোগিতায় মিলেছে নজরকাড়া সাফল্য। বেশিরভাগ ইভেন্টেই ঝুলিতে এসেছে সোনা। এ বার থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে আয়োজিত আন্তর্জাতিক ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ মিললেও তা হাতছাড়া হতে চলেছে কালনার কৃষ্ণদেবপুরের জ্যোতি রাজবংশীর। কারণ, অর্থের অভাব।
কালনার কৃষ্ণদেবপুর গার্লস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জ্যোতি। ওরা তিন বোন। জ্যোতির বড় বোন জয়া রাজবংশীও ক্যারাটেতে প্রতিভাবান। এখন সে দিল্লিতে রয়েছে একটি ক্যারাটে প্রতিযোগিতার আসরে। পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা। বাবা সুজন রাজবংশী অন্যের পুকুরে মাছ ধরেন।
পরিবারের হাল ধরতে তাঁত বোনেন মা শিখা রাজবংশী। জ্যোতি বলেন, ‘৮ মে ব্যাঙ্ককে শুরু হচ্ছে সপ্তম ওয়ার্ল্ড ওপেন ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপ। এই প্রতিযোগিতায় আমার অংশ নেওয়ার ভীষণ ইচ্ছে। তবে তাতে লক্ষাধিক টাকা খরচ হবে। অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারব কি না জানি না। কেউ সাহায্য করলে খেলতে যেতে পারব।’
জ্যোতির মা বলেন, ‘হাতে মাত্র কয়েকটা দিন। মেয়ে যেতে চাইছে। কিন্তু এত টাকা কোথায় পাব? কোনওরকমে টাকাপয়সা জোগাড় করে বড় মেয়েকে দিল্লিতে পাঠিয়েছি। কিন্তু জ্যোতির জন্য লক্ষাধিক টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। চেষ্টা করেও পারছি না।’
জ্যোতির প্রশিক্ষক দেবজ্যোতি সেনের কথায়, ‘১০–১৩ বছর ধরে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। ক্যারাটেতে বহু প্রতিভাবান রয়েছে এই এলাকায়। কেউ বড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেলেও আর্থিক কারণে যাওয়ার মতো মানসিকতা তৈরি হচ্ছে না। সরকার যদি অন্য খেলার মতো এ ক্ষেত্রেও এগিয়ে এসে সাহায্য করে, তা হলে জ্যোতির মতো প্রতিভাবান যারা রয়েছে তারা আরও ভালো জায়গায় যেতে পারবে।’