চাঁদকুমার বড়াল
চার দশকের বেশি সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে কাজ করেছেন কোচবিহারের চকচকার টগররাজ বক্সী। কর্মজীবন শেষে বৃহস্পতিবার যখন নিজের গ্রামে ফিরলেন, উষ্ণ অভ্যর্থনায় ভাসলেন দেশমাতার এই বীরসন্তান। বাড়ির লোকজনের পাশাপাশি গোটা গ্রামের মানুষ ব্যান্ড পার্টি বাজিয়ে, বাজি ফাটিয়ে, শোভাযাত্রা করে বাড়িতে নিয়ে গেলেন তাঁকে। প্রাক্তন এই সেনাকর্মীকে দেখতে গ্রামে ভিড় জমিয়েছিলেন শতাধিক মানুষ।
কোচবিহারের চকচকার বাসিন্দা টগররাজ বক্সী ১৯৮৩ সালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। অবসর নিলেন ৩০ এপ্রিল, বুধবার। ৪০ বছর পার করে সেনাবাহিনীতে ছিলেন তিনি। দেশের সুরক্ষায় প্রতিটা দিন, প্রতিটা মুহূর্ত উৎসর্গ করেছেন। দেশের প্রতিটা মানুষ যাতে সুরক্ষিত থাকেন, সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কত রাত অতন্দ্র প্রহরী হিসাবে কাটিয়েছেন।
কর্মসূত্রে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ১৭টি জায়গায় থেকেছেন টগররাজ বক্সী। কাশ্মীরেই ছিলেন দু’বার। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে ইন্সপেক্টর পদে কর্মজীবন শেষ করলেন। বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়ি ফিরে আসার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে স্থানীয় চকচকা ক্লাব ও পাঠাগার তাঁকে সংবর্ধনা জানায়।
এর পরই ক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা করে তাঁর পরিবারের লোকজন এবং গ্রামবাসীরা বাড়ি নিয়ে যান। বাড়ির সামনে ফুলে সাজানো হয়েছিল মঞ্চ। কেদারা সাজানো হয়েছিল রাজকীয় ভাবে। সেখানেই বসেছিলেন টগররাজ বক্সী। সকলে ফুলের তোড়া দিয়ে সম্মান জানান তাঁকে। সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্মীর স্ত্রী গীতা বক্সী, মেয়ে আশা বক্সী ও ছেলে আকাশ বক্সী।
টগররাজ বক্সীর কথায়, ‘আমি দক্ষিণ ভারত বাদে সমস্ত জায়গায় ডিউটি করেছি। আমাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষার জন্য সব সময়ই কাজ করতে হয়। আমিও করেছি। আমি কখনও যুদ্ধে যাইনি। তবে প্রচুর দু্র্গম জায়গায় কাজ করেছি। কিষাণগঞ্জ পাঞ্জিপাড়ায় আমার লাস্ট পোস্টিং ছিল। ৪১ বছর কাজ করেছি। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিশাল পরিবার। সেই পরিবারকে মিস করব।’ তবে একটাই আনন্দ, বহু বছর পর, পরিবারের সকলের সঙ্গে একসঙ্গে থাকতে পারবেন।