শান্ত ও নম্র স্বভাবের উদিতা রায় ছোট থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ও মনোযোগী। তার স্বপ্ন IIT-তে গবেষণা করার। রাজ্যে মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান দখল করে এ বার নিজের স্বপ্নের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল উদিতা। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা প্রভাতী বালিকা বিদ্যাপীঠের ছাত্রী উদিতা মাধ্যমিকে ৭০০-র মধ্যে পেয়েছে ৬৮৮। শুক্রবার সকালে টিভিতে নাম শোনার পরই খুশিতে চোখে জল চলে আসে উদিতা ও তার বাবার। আনন্দে কথা বলার ভাষা হারান দু’জনেই। এখনও সবটাই যেন স্বপ্নের মতো লাগছে উদিতার।
বেলদার নবোদয়পল্লি এলাকার বাসিন্দা উদিতা ও তার পরিবারের লোকজন শুক্রবার সকাল থেকেই চোখ রেখেছিলেন টিভির পর্দায়। তাঁরা আশা করতে পারেনি উদিতার নাম টিভিতে শুনতে পাবেন। কিন্তু উদিতার নামটা যখন টিভিতে শুনলেন তখন আর চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি বাবা। খুশিতে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। উদিতার মা অনুরূপা রায় পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী। সকালেই তিনি নিজের কাজে বেরিয়ে যাওয়ায় বাড়িতে ছিলেন না। তাই খুশির খবরটা অনুরূপা রায়কে ফোন করে জানান উদিতার বাবাই।
উদিতার সাফল্যে খুশি হয়ে তাকে মিষ্টি মুখ করিয়েছেন তার ঠাকুমা। খুশি উদিতার দাদুও। দিদির ভালো রেজাল্ট দেখার পর উচ্ছ্বসিত উদিতার বোন উর্জাও। উর্জা বেলদা প্রভাতী বালিকা বিদ্যাপীঠেই সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। নিজের রেজাল্ট দেখার পর কী বলছে বেলদার উদিতা? পড়াশোনার জন্য কতটা সময় দিত সে? উদিতা বলেন, ‘বাঁধাধরা নিয়ম মেনে কখনও আমি পড়েনি। যখন পড়তে ইচ্ছে করত, তখনই পড়তাম। উপন্যাস পড়তে খুব ভালো লাগে। আবৃত্তি করতেও ভালোবাসি।'
উদিতার বাবা বিশ্বজিৎ রায় খালিনা হাইস্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। মেয়ের সাফল্যে খুশি হয়ে তিনি বলেন, ‘সবার আগে এটাই চাইব, ভালো মানুষ হোক। ভালো মানুষের বড্ড অভাব আমাদের সমাজে।’ প্রসঙ্গত, এ বারের মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের তিন জন ছাত্রছাত্রী। এদের মধ্যে অষ্টম স্থানে রয়েছে দু’জন। একজন উদিতা রায় ও অন্যজন ঘাটালের মনসুখা লক্ষ্মীনারায়ণ হাইস্কুলের ছাত্র অরিত্র সাঁতরা। দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। আর নবম স্থানে রয়েছে ওই জেলারই বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমির ছাত্র অঙ্কুশ জানা। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৭।