• মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর খোঁজও রাখেননি বাবা, মাধ্যমিকে ‘দশম’ সৌভিক ডাক্তার হতে চায়
    প্রতিদিন | ০২ মে ২০২৫
  • সুরজিত দেব, ডায়মন্ড হারবার: মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল অনেক আগেই। মায়ের হাত ধরে তারপর মামাবাড়িতে চলে এসেছিল ছোট্ট সৌভিক। তারপর থেকে সেখানেই পড়াশোনা, বড় হয়ে ওঠা। মাধ্যমিকের ফল বেরনোর পর সেই সৌভিককে নিয়ে এখন উচ্ছ্বাস পরিবারের। আনন্দে ছেলেকে আঁকড়ে ধরেছেন মা। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার মেধাতালিকায় সম্ভাব্য দশম স্থানে রয়েছে কাকদ্বীপের সৌভিক দিন্দা। মাধ্যমিক পরীক্ষায় তার নম্বর ৬৮৬। বড় হয়ে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন।

    দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের সুন্দরবন আদর্শ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র সৌভিক দিন্দা। ছোট থেকেই বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখেছে সে। একসময় বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ছেলেকে নিয়ে মা কাকলি বেরা বাপেরবাড়ি চলে আসেন। সেই মামারবাড়িই হয়ে ওঠে সৌভিকের বর্তমান ঠিকানা। মা ও সৌভিককে দূরে সরিয়ে দেননি মামার পরিবার। তার পড়াশোনার দায়িত্ব নেন মামা। ছোট থেকেই মেধাবি ছাত্র সৌভিক স্কুলে ভালো ফল করতে থাকে। শিক্ষকরাও তার পড়াশোনার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িতে দিয়েছিলেন।

    তার পড়াশোনার জন্য কখনওই খামতি রাখেনি মামাবাড়ির সদস্যরা। বাড়িতে পড়ার জন্য গৃহশিক্ষকও সৌভিকের। এদিন সকালে ফল বেরনোর পরই কাকদ্বীপের ওই বাড়িতে আনন্দের ঢল নামে। মা কাকলি বেরা ও অন্যান্যরা সৌভিককে মিষ্টি খাওয়ান। সম্ভাব্য দশম স্থানে রয়েছে সে। নিয়ম করে পড়াশোনায় বসে। আর তাতেই সাফল্য বলে মনে করছে সে। আগামী দিনে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় সে। পরবর্তীতে ডাক্তার হয়ে দুস্থ মানুষদের সেবা করার ইচ্ছা সৌভিকের। পড়াশোনা ছাড়াও শৌভিকের ভালো লাগে সিনেমা দেখতে, গান শুনতে আর ক্যুইজে অংশ নিতে। ক্রিকেট তার বড় প্রিয় খেলা। প্রিয় ক্রিকেটার রোহিত শর্মা। অবসর সময় কাটে তার গোয়েন্দা কাহিনী পড়ে। কাকাবাবু, ব্যোমকেশ তার প্রিয় চরিত্র।

    বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর বাবা সৌভিকের খবর পর্যন্ত নেননি। ছেলের জন্য কোনও আর্থিক সহায়তাও করেননি বলে জানা গিয়েছে। এই সাফল্যের পিছনে মা-মামাবাড়ির সদস্যদের অবদান রয়েছে। তেমনই জানিয়েছে সে। সৌভিককে নিয়ে গর্বিত গৃহশিক্ষকরাও। সুন্দরবন আদর্শ বিদ্যামন্দিরের সহকারী প্রধান শিক্ষক শংকর বিশ্বাস বলেন, “স্কুলের নাম উজ্জ্বল করায় সৌভিককে অভিনন্দন।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)