কেউ চায় বিজ্ঞানী হতে, তো কেউ আবার চায় ডাক্তার হয়ে গরিব মানুষের সেবা করতে। কারও পছন্দের বিষয় পদার্থবিদ্যা, তো কারও আবার জীবনবিজ্ঞান। এরা সকলেই বীরভূম থেকে মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান দখল করেছে। তিনজন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে দু'জন রামপুরহাট জে এল বিদ্যাভবনের ছাত্র। তাদের নাম অরিজিৎ মণ্ডল ও স্পন্দন মৌলিক। অন্য দিকে, অন্যজন নব নালন্দা হাইস্কুল শান্তিনিকেতনের ছাত্রী সৃজয়ী ঘোষ। মাধ্যমিক পরীক্ষায় তাদের সকলেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। পরীক্ষার রেজাল্ট দেখার পর কী বলছে তারা?
অরিজিৎ মণ্ডল ও স্পন্দন মৌলিকের বন্ধুত্ব প্রাথমিক স্কুল থেকে। হাই স্কুলে উঠেও তাদের সেই বন্ধুত্বে চিড় ধরেনি। এমনকী, তাদের স্কুলের রোল নম্বরও ১ এবং ২। এ বার জীবনে প্রথম বড় পরীক্ষাতেও তাদের রেজাল্ট এক। তারা ফল ঘোষণার পরে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। রেজাল্ট বেরোনোর পর স্পন্দন মৌলিক বলে, ‘ভেবেছিলাম প্রথম পাঁচে থাকব। কিন্তু এই রেজাল্টেও আমি খুশি। বাবা-মা দু'জনেই আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। বাবা শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত, তাই সকালে বেরিয়ে যেতেন। কিন্তু মা বাড়িতে থাকায় পড়াশোনায় অনেকটাই সাহায্য করেছেন। এর পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদান তো রয়েছেই।’ স্পন্দন জানিয়েছে, কোন নির্দিষ্ট সময় বেঁধে সে পড়ত না। বরং যখন ভালো লাগত, তখনই পড়ত। ভবিষ্যতে পদার্থবিদ্যা ও অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করে বিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে কৃতী ছাত্রের।
স্পন্দনের মা পিঙ্কি মৌলিক বলেন, ‘সকালে টিভির সামনে আমরা সবাই বসেছিলাম রেজাল্ট শোনার জন্য। যখন ছেলের নামটা শুনলাম, খুব আনন্দ পাই। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। ও পড়াশোনায় খুব ভালো। ওর পড়াশোনার জন্য যেটুকু সাহায্য করার, সেটুকু করেছি। বাকি সবটাই ও নিজের চেষ্টায় করেছে।’ নিজের রেজাল্ট দেখার পর কী বলছে অরিজিৎ মন্ডল? কৃতী পড়ুয়া বলে, ‘এতটা আশা করিনি। বাবা-মা সব সময় আমাকে উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। প্রতিদিন ১২-১৩ ঘণ্টা পড়তাম। আমি সবাইকে বলব খুব ভালো করে টেক্সট বই পড়তে। আমার বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলের সাহায্যেই আজকে ভালো রেজাল্ট হয়েছে।’ অরিজিতের ইচ্ছে, আগামী দিনে মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে পড়ার। সে চায় ডাক্তার হয়ে মানুষকে সেবা করতে।
অন্য দিকে, নব নালন্দা হাইস্কুল শান্তিনিকেতনের ছাত্রী সৃজয়ী ঘোষের সাফল্যে খুশি সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সেখানকার প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘সৃজয়ীর জন্য আমরা গর্বিত। ও শুধুমাত্র ভালো ছাত্রী নয়, ভালো মনের মানুষও।’ কী বলছে কৃতী ছাত্রী সৃজয়ী? সে বলে, ‘আমি প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা পড়তাম। আমি পরিবার ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে সবসময় সাহায্য পেয়েছি। অবসর সময়ে ছবি আঁকি ও বই পড়ি। পরবর্তীকালে মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে পড়ার ইচ্ছে রয়েছে।’