পাসপোর্ট কাণ্ড: ২৫০টির বেশি ভুয়ো নথি বানিয়ে দেন বিরাটির ‘পাকিস্তানি’ আজ়াদ! দাবি ইডির, তথ্য চাইল এনআইএ-ও
আনন্দবাজার | ০২ মে ২০২৫
ভুয়ো পাসপোর্ট কাণ্ডের তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইডির হাতে। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে বিরাটি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল আজ়াদ মল্লিক নামের এক ব্যক্তিকে। ইডি আদালতে দাবি করে, তিনি আদতে পাকিস্তানের নাগরিক। সূত্রের খবর, সেই আজ়াদ শুধু নিজের জন্য নয়, অন্য অনেকের জন্যই ভুয়ো নথি এবং পাসপোর্ট তৈরি করে দিয়েছিলেন। ২৫০টিরও বেশি ভুয়ো নথি আজ়াদ তৈরি করেছিলেন বলে তদন্তে জানতে পেরেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। কাদের এই নথি দেওয়া হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আজ়াদের বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে এনআইএ। ইডির কাছ থেকে ওই ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে তারা।
প্রথমে মনে করা হয়েছিল, বিরাটি থেকে ধৃত আজ়াদ বাংলাদেশি। পরে ইডি জানায়, তিনি পাকিস্তানি। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে তাঁর পরিচয় রয়েছে। সূত্রের খবর, ১২ থেকে ১৩ বছর আগে আজ়াদ ভারতে এসেছিলেন। তিনি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। বাংলাদেশে রয়েছে তাঁর পরিবার। এত দিনে যাঁদের জন্য ভুয়ো পাসপোর্ট এবং নথি তিনি বানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের পরিচয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আদতে তাঁরা পাকিস্তানি না বাংলাদেশি, না অন্য কোনও দেশের বাসিন্দা, কেন ভুয়ো নথি তৈরি করানোর প্রয়োজন হল, কেন ভারতে আসার প্রয়োজন হল, দেখছে তদন্তকারী সংস্থা।
ইডির দাবি, পাকিস্তানি পরিচয় আড়াল করতে বাংলাদেশি পরিচয় ব্যবহার করতেন আজ়াদ। পরিচয় বদলে এ দেশে ভিসার আবেদন করেছিলেন। নিজের জন্য তিনি বানিয়েছিলেন দু’টি ভোটার কার্ড এবং একাধিক ড্রাইভিং লাইসেন্স। এক এক দেশে এক এক নামে তাঁর পরিচয়। ভারতে আজ়াদ মল্লিক হলে বাংলাদেশে তিনি আহমেদ হোসেন আজ়াদ এবং পাকিস্তানে তাঁর নাম ছিল আজ়াদ হোসেন। মিলেছে তাঁর চারটি জন্ম শংসাপত্রের হদিস। অভিযুক্তের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে দু’কোটি ৬২ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। আদালতে সওয়ালের সময়ে জাতীয় সুরক্ষার বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন ইডির আইনজীবী। অভিযুক্তের অপরাধমূলক কাজকর্ম থেকে পাওয়া টাকা কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়েছে, তার সঙ্গে দেশবিরোধী কাজের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত ৮ মে পর্যন্ত ইডি হেফাজতে রয়েছেন আজ়াদ।